কেফায়েত উল্লাহ মিয়াজী :
বিগত ১৫বছর পূর্বে দখল হয়ে যাওয়া বসত বাড়ি ফিরে পেতে প্রশাসনের দ্বারে-দ্বারে ঘুরছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার লক্ষীপদুয়া গ্রামের আলী আশ্বব ভোলা মিয়ার ছেলে রিক্সাচালক আব্দুল করিম। এ ব্যাপারে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় লক্ষীপদুয়া গ্রামের হাবিব উল্লাহর ছেলে মাহবুবুল হক (৪৫) জমিটিতে দোকানঘর নির্মাণ করে দখল করে রেখেছে। একই সময়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লক্ষীপদুয়া গ্রামের ফজুর নেছার নিকট থেকে ১৯৬৭ সালে ১৯৪৬ নং দলিলে একই গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে আলী আশ্বব ভোলা মিয়া ও মোহম্মদ হোসেন ১৫ শতক জমি ক্রয় করেন। ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে এ জমিতে দখল থাকা অবস্থায় স্ত্রী, ১পুত্র ও ৩কন্যা রেখে পরলোকগমণ করেন আলী আশ্বব ভোলা মিয়া। পরবর্তীতে ১৫ শতক জমির মধ্যে পিতার হিস্যায় সাড়ে ৭শতক জমিতে বসত বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে মৃত আলী আশ্বব ভোলা মিয়ার ছেলে আব্দুল করিম। ২০০৮সালে তাদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে এ জমি দখল করে নেয় লক্ষীপদুয়া গ্রামের হাবিব উল্লাহর ছেলে মাহবুবুল হক ও একই গ্রামের নূরুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। এরপর থেকে একমাত্র জমিটি দখল হয়ে যাওয়ায় ভূমিহীন হয়ে যায় আব্দুল করিম।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী আব্দুল করিম বলেন, আমার পিতা সাড়ে ৭শতক জমিন ক্রয় করে। এ জমিতে আমরা বাড়িঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করি। আমার পিতার মৃত্যুর পর মাহবুবুল হক, জাহাঙ্গীর ও মাহবুবুল হকের ভাইয়েরা মিলে আমার বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে জোর পূর্বক দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করে। কি সূত্রে জমির মালিক এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবুল হক দাবি করেন লক্ষীপদুয়া গ্রামের নূরুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের নিকট থেকে তারা এ জমিন ক্রয় করে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলমের কাছে গেলে তিনি বলেন এ জমি আমার পিতা ক্রয় করে নিজ নামে বি.এস খতিয়ানে অর্ন্তভূক্ত করে, খতিয়ান মূলে পিতার হিস্যায় মালিক হয়ে মাহবুবুল হকের নিকট বিক্রি করি। কিন্তু তাদেরকে আমার পিতার বিক্রি করা দলিল দেখাতে বললে জাহাঙ্গীর আলম দলিল না দেখিয়ে উল্টো আমাকে মারপিট করতে তেড়ে আসে। পরে আমি নাঙ্গলকোট, লাকসাম, গুণবতী, চৌদ্দগ্রাম ও কুমিল্লা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে তল্লাশী দিয়ে আমার পিতা আলী আশ্বব ভোলা মিয়ার দেয়া কোন দলিল পাইনি। এমতাব্স্থায় গত সোমবার আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জের নিকট লিখিত অভিযোগ করি। এ ঘটনায় আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
অভিযুক্ত মাহবুবুল হক মোবাইল ফোনে বলেন, এটি আমাদের খরিদা জমি। জমিটি আমরা জাহাঙ্গীরের নিকট থেকে ক্রয় করেছি। জাহাঙ্গীরদের নামে বি.এস আছে তারা আমাদের নিকট বি.এস মূলে বিক্রয় করে। এখন করিম এসে জমিটি নিজের দাবি করে দখল করার চেষ্টা করছে।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ এ.কে ফজলুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।