
তিনতলা ফাউন্ডেশন দিয়ে সিমেন্ট ও বালুর সাথে প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করে একটি পাকা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জ ক্রিকেট দলের সদস্য শারিরীক প্রতিবন্ধী মো. ইকবাল হোসেন (৩০)। প্রথম তলার ছাদের কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগেই স্বপ্ন ভঙ্গ হতে পারে তার। হাতে থাকা সকল অর্থই ব্যয় করেছেন তিনি এই বাড়ি নির্মাণে। বর্তমানে অর্থাভাবে বন্ধ রয়েছে বিল্ডিংয়ের সকল কার্যক্রম। সময়মত বিল পরিশোধ না করায় নির্মাণ সামগ্রী ও আসবাব পত্র সরিয়ে নিচ্ছে সরবরাহকারীগণ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মীবৃন্দ তার এই বাড়িটি পরিদর্শন করেছেন। প্রথমে অনেকে পাগলামি বললেও এখন প্রশংসা করছে তার।
ক্রিকেটার ইকবালের সংসারে বৃদ্ধ মাতা ভাই ও ৪ বোন রয়েছে। ভাইয়ের মধ্যে ইকবাল বড়। ছোট ভাই সেও একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। ২০ বছর পূর্বে পিতাকে হারিয়ে সেই থেকেই সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। অভাবে এগোয়নি তার লেখা পড়া। অনেক যুদ্ধ করে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন তিনি। ক্রিকেট খেলা তার শখ। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জ ক্রিকেট দলের একজন সদস্য হয়ে ইন্টারন্যাশনাল খেলায়ও অংশ গ্রহণ করেছেন তিনি। সে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বলইবুনিয়া ইউনিয়নের কালিকাবাড়ি গ্রামের মৃত. ইলিয়াস হোসেনের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, বাংলাদেশ ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জ ক্রিকেট দলের সদস্য শারিরীক প্রতিবন্ধী মো. ইকবাল হোসেন ইউটিউব দেখে কুড়িয়ে নেওয়া প্লাস্টিকের বোতল ফেরীওয়ালার কাছ থেকে ক্রয় করে আড়াই শতক জমির ওপর জাপানি প্রযুক্তিতে পরিবেশ বান্ধব তিনতলা একটি বাড়ি নির্মাণ শুরু করেছেন।গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া ভবন নির্মাণে সিমেন্ট ও বালুর সাথে এ পর্যন্ত ৭০ হাজারের অধিক এক লিটার ও আধা লিটারের প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করা হয়েছে। ইকবাল দৃষ্টিনন্দন এই বাড়ি নির্মাণ ব্যয় মিটাতে পারছে না এখন। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ইকবালের স্বপ্নের বোতল বাড়ি নির্মাণ।
কথা হলে ইকবাল হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, একটি ঘর নির্মাণের জন্য ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি তাকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে ছিলেন। ইউটিউব দেখে বোতল বাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি। শুরুও করেন বোতল বাড়ি নির্মাণ কাজ। এ পর্যন্ত তার ৬ লাখ টাকা ব্যায় হয়েছে এই বাড়ি নির্মাণে। এই মুহূর্তে কাছে টাকা নেই, তাই থমকে আছে বাড়ি নির্মাণের কাজ। টাকা পয়সা হাতে এলে আবার শুরু হবে আমার স্বপ্নের বোতল বাড়ি নির্মাণ কাজ বলে জানান ইকবাল।