রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিগত সরকারের আমলে পুকুর খনন ব্যবসা করে কোটিপতি হয়েছেন অনেক নেতা কর্মীরা। সময় পরিবর্তন হলেও বন্ধ হয়নি পুকুর খনন। আগে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ম্যানেজ করে পুকুর খনন শুরু করত খননকারীরা। এখন ছাত্র আন্দোলনের পর প্রশাসন একটু ব্যস্ত থাকায় সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা করছেন পুকুর খননের কাজ।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সড়গাছি বিলে কয়েকটি নতুন পুকুর। কোনোটির কাজ শেষ, কোনোটির অর্ধেক আবার কোনো কোনোটিতে চলমান রয়েছে, এর মধ্যে বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর বাজারের ব্যবসায়ী সাজেদুর রহমান ও তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা শামসুর রহমান মিন্টু নামের দুই ব্যক্তি সেখানে পুকুর খনন ও ভরাট কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে আওয়ামীলীগ সরকারের সময়, সবচেয়ে বেশি পুকুর খনন করা হয়েছে উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়ন, শিলমাড়িয়া, জিউপাড়া ও ভাল্লুকগাছী ইউনিয়নে। এতে ব্যাপকহারে কমেছে দুই ও তিন ফসলি জমি।
এদের কোথাও কোথাও আবার অনেক সাধারণ মানুষের জমি জোর করে দখল নিয়েও পুকুর খনন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল বিগত সরকারের আমলে। এসব নিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষরা একাধিকবার মানববন্ধন করলেও কোন প্রকার আইনি সহযোগিতা পায়নি জমির মালিকরা। সেই একই রকম কাজ আবারো শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সাধারণ মানুষরা বলছেন আগে করত আওয়ামী লীগ এখন করছে বিএনপি।
সেখানে পুকুর খনন কাজে দায়িত্বে থাকা স্থানীয় মোসাদ্দেক হোসেনসহ কয়েকজন ব্যাক্তি বলেন, এখানে কয়েকটি পুকুর খনন কাজ চলছে। সবাইকে বলেই তা করছি আমরা। একটা বিএনপি নেতা সাবেক মেয়র মিন্টু ভাইয়ের। আরেকটা সাজেদুর ভাইয়ের।
এ বিষয়ে জানতে পুকুর খননকারী সাজেদুর রহমান’কে একাধিক ফোন দেয়ার পরও ফোন রিসিভ করেনি।
এ বিষয়ে পুকুর খননকারী সাবেক মেয়র শামসুর রহমান মিন্টু মুঠোফোনে বলেন, জি পুকুর খননের কাজ একটা হচ্ছে সেটার দায়িত্ব কামাল’কে দেওয়া আছে। আর হয়তো ৩-৪ দিন কাজ হবে।
তবে এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ, কে, এম নূর হোসেন নির্ঝর বলেন, বতর্মানে আইন শৃংখলার পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় অভিযান দেওয়া সম্ভব না। কিছুদিন পর থেকে আমাদের অভিযান চলবে। আর কোথায় কে করছে সেটা বলেন দেখি তাদের কি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
এ বিষয়ে সরকার অসীম কুমার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তিনি বলেন, পুকুর খননকারীরা সে যেই হোক আওয়ামীলীগ আর বিএনপি আইন সবার জন্য সমান। যারা আইন মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।