
বাগেরহাট সদর উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব হাওলাদার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মারপিট হুমকি ও ভয় ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে ষাট গম্বুজ ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ষাট গম্বুজ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি গৌর চন্দ্র পাল। এ সময় হাওলাদার রফিকুল ইসলামের হাতে নির্যাতিত কয়েকটি পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে হাওলাদার রফিকুল ইসলাম বারাকপুর বাজার কমিটির সভাপতি হয়েছে, মৎস্য আড়তের সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এভার গ্রিনের সভাপতি হয়েছে। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বিশেষ করে তার ভগ্নিপতি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ার হোসেন টগরের সহায়তায় এলাকায় বিচার সালিশ করে প্রচুর অবৈধ টাকা উপার্জন করেছে। বিচার সালিশের নামে করেছে নির্যাতন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার পতনের পর সে এলাকায় আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এলাকার কাকড়া ব্যবসায়ী দীপক দাসের কাছে চাঁদা দাবি করে। স্থানীয় উজ্জল পালের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা নিয়েছে। এনজিও প্রকল্পের একটি ট্রেনিং শেষে কয়েক ব্যক্তির নিকট থেকে রফিকুল ও তার সহযোগী সেকেন্দার আলী দুই হাজার টাকা করে কেটে নেয়। টাকা চাইতে গেলে মারপিট করে পকেটে থাকা আরও ৩ হাজার ৫ শ টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে ভুক্তভোগীরা সংবাদ সম্মেলনে জানান ।
এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য অনিল কৃষ্ণ মন্ডলের ছেলে মধুসূদন মন্ডলকে বারাকপুর বাজারে পিটিয়ে আহত করে নগত ২ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। প্রধান শিক্ষক বিজন কৃষ্ণ পালকে মারপিট করে ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। সে ও তার বাহিনী এলাকার প্রায় ২৫ – ৩০ টি খাল ও মৎস্য খামার অবৈধভাবে দখল করেছে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ তার হামলার শিকার হচ্ছে। রফিকুল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না।
সর্বশেষ ২৩ শে এপ্রিল সন্ধ্যায় রিক্তা খাতুন নামীয় ২০ বছরের এক কন্যা রিক্সাযোগে ষাট গম্বুজ বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। ভুটিয়ামারী নামক স্থানে পৌঁছানো মাত্র রফিকুল হাওলাদার ও তার প্রধান সহযোগী সুমন দাস ও শুভ পাল রিক্তা খাতুনকে হাত ধরে রিকশা থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে মারপিট শুরু করে। তারা তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ বিষয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেক সদস্য যাতে সামাজিক মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পারে সে লক্ষ্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রয়োজনে তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ দলের সকল পদ থেকে বহিষ্কারের দাবী জানান তারা। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, রসময় অধিকারী, বাবু মধুসূদন দত্ত, রিক্তা খাতুন, উজ্জল পাল, লাভু বাছাড়, দিপালী পাল, অনুভা রানী পাল, শিপ্রা পাল, সুধা রানী পাল, আম্বিয়া বেগম সহ অনেকে।
এ বিষয়ে কৃষক দল নেতা হাওলাদার রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
Please follow and like us: