দিনাজপুরের বিরলে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সাথে বিরল উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হায়দার আলী ও ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মোঃ লাইসুর রহমান এবং বিএনপি’র অন্যতম কর্মী ও সমর্থক সাবেক সেনা সদস্য রেজাউল করিমকে জড়িয়ে সাঁওতালদের মদদে চুয়ানির ব্যবসা এখন নিয়ন্ত্রণে নেয়া, সাঁওতাল পরিবারদের খুঁটি বানিয়ে ভূমি দখল ও মদ- বাংলা চুয়ানি বিক্রির কমিশন নেয়ার মনগড়া, ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ পরিবেশন এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ৩ নং ধামইর ইউনিয়ন বিএনপি’র আয়োজনে পিপল্ল্যা (ধুকুরঝাড়ী) সাঁওতাল পল্লীতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ লাইছুর রহমান। এসময় উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হায়দার আলী, ১ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আহাদ আলী, ২ নং ওয়ার্ডের সভাপতি আইয়ুব আলী, সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন শুকু, ৮ নং ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোসলেম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হোসেন, ৩ নং ওয়ার্ডের সভাপতি মোজাম্মেল হক, সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দিন, ৪ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন তাঁতীদলের আহ্বায়ক আব্দুল জব্বার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে লাইছুর রহমান বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সাথে বিরল উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হায়দার আলী ও ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মোঃ লাইসুর রহমান এবং বিএনপি’র অন্যতম কর্মী ও সমর্থক সাবেক সেনা সদস্য রেজাউল করিমকে জড়িয়ে মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া ও ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করে। সংশ্লিষ্ট সংবাদটির বিষয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নেয়া হয়নি বরং কৌশলে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আমাদের নাম জড়াতে দ্বিধা করেননি। দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়ে ফরক্কাবাদ ইউনিয়নের তৈয়বপুর গ্রামের মৃত ফজল মাষ্টারের ছেলে নজরুল ইসলাম মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে মোতাহার আলী, মোকলেছুর রহমান, মোতাহারের ছেলে বেলাল এর সহযোগীরা সাঁওতালদের বসবাসকৃত বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকী প্রদান করলে আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সাঁওতালদের ঘর-বাড়ী ভাঙ্চুর এর প্রতিবাদ করি এবং আইনী প্রক্রিয়ায় আদালতের মাধ্যমে বিরোধীয় বিষয়টি নিষ্পত্তির কথা জানিয়ে দুস্থ সাঁওতালদের মানবিক সাহায্য সহযোগিতার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যক্তিগতভাবে ও দলের পক্ষ হতে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করি। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা আইনের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর আদর্শের রাজনীতি করি। আমরা আপোষহীন নেত্রী তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান এর নির্দেশনা মোতাবেক জনস্বার্থে জনগণের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করি।
যখন একটি মহল সংখ্যালঘু পরিবারের নির্যাতনের অপতৎপরতায় মগ্ন আমরা তখন সংখ্যালঘু নয় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের একজন নাগরিক হিসেবে তাদের পাশে দাড়াই। আমরা মনবতার কল্যানে নিবেদিত। আমাদের কল্যাণমূলক কাজে একটি মহল অপপ্রচার চালিয়ে আমাদেরকে সমাজে কুলষিত করার অপচেষ্টা করছে। আমাদের কল্যাণমূলক কাজে ঈশ^ার্নিত হয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনৈতিক কাজের সাথে আমাদের নাম জড়িয়ে যা ইচ্ছে তাই অপ্রপ্রচার করা হচ্ছে। আপনারা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম। তাই বিরল উপজেলার পিপল্ল্যা মৌজায় অবস্থিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী (আদিবাসী/সাঁওতাল) এর ঘর-বাড়ী দেখে এবং তাদের সাথে কথা বলে ইতিপূর্বে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে সরজমিনে চিত্র তুলে ইতিমধ্যে সংবাদমাধ্যমে তা পরিবেশন করেছেন। আগামীতেও সকল অপপ্রচারের উর্দ্ধে থেকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে বাস্তবতা তুলে ধরে প্রচার করবেন এটাই প্রত্যাশা করি। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১৫ নভেম্বর ২০২৪ শুক্রবার দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকায় সাঁওতালদের ঢাল বানিয়ে আ.লীগ বিএনপির দখলবাজি শিরোনামে প্রকাশিত মনগড়া, ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদটিতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সাথে আমাদের নাম জড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রকৃত তথ্য সরজমিনে যাচাই বাছাই করে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ তুলে ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি বা এর কোন কর্মী ও সমর্থক যে সাঁওতালদের খুঁটি বানিয়ে ভূমি দখলবাজি বা মদ ও বাংলা চুয়ানি বিক্রির কমিশনের সাথে জড়িত নয় তা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছি।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর খ্রিস্টান মিশনের পালক হরিমোহন ভুঞ্জার জানান, আমাদের ঘর-বাড়ী ভেঙ্গে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য নজরুল, মোকলেশ, বেলাল, ছাত্তার, জব্বার, উতু এর লোকজন আমাদের হুমকী দেয় এবং ৬ আগস্ট ২০২৪ আমাদের ঘর বাড়ী ভাঙ্চুর শুরু করলে হায়দার ভাইসহ অনেকে এসে আমাদের রকবষা করেন। আমি মিশনে ফোন দেই, মিশন আমাদের অবস্থা দেখে ২৫ কেজি করে চাল, ২ লিটার তেল, ১ কেজি মসুর ডাল ও ১ কেজি লবন প্রত্যেক পরিবারকে দেয়। এরপর আমাদেরকে হুমকিদাতারা এসে ৭ দিনের মধ্যে ঘর-বাড়ী ভাঙ্গার আল্টিমেটাম দেয়। তারপর মিশন থেকে আমাদের আর্থিক সহযোগিতায় ঘর-বাড়ী মেরামত ও তৈরী করে দেয়। আমাদের এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। এখন আমাদের জমির পাকা ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার জন্য নজরুল, মোকলেশ, বেলাল, ছাত্তার, জব্বার, উতু এর লোকজন অব্যাহতভাবে হুমকী প্রদান করে আসছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এখানে বসবাস করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চাই।
Please follow and like us: