দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট বক্তব্য দেওয়া ও হয়রানির প্রতিবাদে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা বীরগঞ্জ প্রেসক্লাবে ৭ ডিসেম্বর শনিবার বিকাল ৫টায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খামার খড়িকাদম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ কাদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর বীরগঞ্জের ইউএনও’র প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মহাসড়ক অবরোধের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে এলাহী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফেসবুক ও গণমাধ্যমে এসএসসি ফরম পূরণ বিষয়ে বানোয়াট ও মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে এলাকায় বিভ্রান্তি ছড়াছেন, যা মোটেও কাম্য নয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে কোন মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরম পূরনে ফি বাড়ানোর বিষয় বা অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোনো প্রকার কথাবার্তা বলা হয় নাই কিংবা সম্মতি নিতে যায় নাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে এলাহী এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন ভাবে শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগনকে নানা ভাবে হুমকি, অপমান ও হয়রানি করে আসছেন। শিক্ষকদের বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন ও হয়রানি করছেন- ঝাড়বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও কবিরাজহাট আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নীতিমালা না মেনে জোরপূর্বক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন।
নিজপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কে চরম অপমান করেন এবং চাকুরিচ্যুত করার হুমকি প্রদান করেন।
কবিরাজহাট আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন।
সভাপতি হিসাবে বিলে স্বাক্ষর করার সময় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নেন।
কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নামে আশি হাজার টাকা উত্তোলন বিষয়ে মিথ্যা অপবাদ প্রদান করেন।
যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূণ্য পদ রয়েছে সেই প্রতিষ্ঠান প্রধান কে নিয়োগ বানিজ্যের উদ্দেশ্যে নিয়োগ প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
সাহেবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও চৌধুরীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত ২ জন সহকারী শিক্ষক কে অন্যায়ভাবে শোকজ করেন এবং হুমকি প্রদান করেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের ব্যবহার করে শিক্ষকদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভুল পথে পরিচালিত করেন।
চৌধুরীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব, আব্দুর রহমান কে তদন্ত চলাকলীন সময় ও ছুটিতে থাকা অবস্থায় অন্যায়ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
৫ই আগষ্টের পূর্বে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজেকে আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান হিসেবে নিজেকে জাহির করেছেন।
উল্লেক্ষ, ৪ ডিসেম্বর বীরগঞ্জে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে স্বেচ্ছাচারী ইউএনও-কে প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষক এবং জনতা মানববন্ধন করে। মানববন্ধনের ফলে প্রায় ৩ ঘন্টা মহা সড়ক অবরোধ ছিলো। সংবাদ পেয়ে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এস,এম হাবিবুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, সেনা ক্যম্পের মেজর তানভীর আহমেদ উপস্থিত হয়ে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ও এলাকার কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সাথে আলোচনায় বসেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সকলের অভিযোগ মন দিয়ে শুনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে এলাহী’কে অতি শীঘ্রই প্রত্যাহারের আশ্বাসের ফলে মানববন্ধন স্থগিত করা হয়।
শিক্ষক নেতারা আরো বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রত্যাহারের আশ্বাসের পর শিক্ষক ও জনগন শান্ত হলেও তিনি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ছড়াছেন, যা মোটেও কাম্য নয়, আমরা আশা করি অতি শীঘ্রই এই ইউএন ‘কে দ্রুত প্রত্যাহার করা না হলে অন্যথায় শিক্ষক-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে বীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক, কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ৫নং সুজালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলাম, আন্দোলনের অন্যতম নেতা পলাশবাড়ী ইউনিয়ন সিডিউল কাস্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, বাংলাদেশ শিক্ষক আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক মো: ফসিউল আলম চৌধুরী (লিটন), আমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিব, ঘোড়াবান্দ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান, আত্রাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, জগদল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ এমদাদুল হক, প্রাণনগর আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম, আমিনা করিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ কুমার সরকার, পলাশবাড়ী বি কে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।