
প্রশাসনের দেয়া শর্ত অমান্য করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময় বরিশালের গৌরনদীতে নির্বিঘেœ জামদানি মেলার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। রোববার দুপুর ১২টার দিকে পৌরসভার বালুর মাঠে অনুষ্ঠিত জামদানি মেলায় ঘুরতে এসে এক কলেজছাত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময় মেলার কার্যক্রম চলা ও টিকিট বিক্রির বিষয়টি জেনেও না জানার ভান করছে স্থানীয় প্রশাসন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ১৪টি শর্ত সাপেক্ষ্যে গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে শুরু হয়ে এক মাসব্যাপী ‘দেশীয় পণ্য জামদানী মেলা ২০২৪’ আয়োজনের অনুমোদন দেয়া হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট) মো. শহীদউল্লাহ স্বাক্ষরিত ওই অনুমতিপত্রে যার মেয়াদ গত ১৬ জানুয়ারি শেষ হয়েছে। অনুমতিপত্রে মেলার কার্যক্রম প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও মেলা কর্তৃপক্ষ শর্ত অমান্য করেই প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেলার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি অবৈধভাবে প্রত্যেক দর্শনার্থীর কাছে প্রবেশের জন্য ১০টাকা মূল্যে টিকিট বিক্রি করছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে দেখা যায়, সরকারি গৌরনদী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ১০-১২ জন শিক্ষার্থী প্রত্যেকে ৫০ টাকা টিকেট মূল্যে নৌকা দোলায় (রাইড) ওঠে। দোল খাওয়ার সময় পাপিয়া আক্তার নামে এক ছাত্রী গুরতর অসুস্থ হয়ে পরে। পরবর্তীতে অচেতন অবস্থায় তাকে (পাপিয়া) দোলা থেকে নামিয়ে এক সহপাঠী কোলে তুলে মেলা থেকে বের করে একটি ইজিবাইযোগে গ্রীন লাইফ ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যায়।
গ্রীন লাইফ ক্লিনিকের ম্যানেজার শাওন আহম্মেদ জানান, মেলায় ঘুরতে এসে অচেতন হয়ে পড়া এক কলেজছাত্রীকে ক্লিনিকে নিয়ে আসা হলে তাকে ১ঘন্টা অক্সিজেন দেয়ার পর একটু সুস্থ হলে সহপাঠীরা তাকে নিয়ে চলে যায়।
পার্শ্ববর্তী কালকিনি উপজেলা থেকে আসা স্কুলছাত্রী তামান্না আক্তার জানান, বাড়ি থেকে স্কুলের কথা বলে মেলায় ঘুরতে এসেছি। আঃ খালেক মিয়া, স্বপন হোসেন, খলিল তালুকদারসহ একাধীক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে করে জানান, বিদ্যালয় ফাঁকি দিয়ে শিক্ষার্থীরা মেলায় অবাধে ঘোরাফেরা করায় লেখাপড়ায় ব্যপক বিঘœ ঘটছে। এ সময় অনতিবিলম্বে মেলা বন্ধের দাবীও জানান এসকল অভিভাবকরা।