গাজীপুরের শ্রীপুরে সেলুনের ভেতর থেকে আবু সাঈদ (২৩) নামে এক পোশাক শ্রমিকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২ অক্টোবর) দিবাগত রাত পৌনে ১২ টার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার মেঘনা গ্রুপের কারখানা সংলগ্ন একটি ভবনের দোতলায় জেন্টস্ পার্লারের নামের একটি সেলুন থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেলুনের ভেতরে মরদেহের পাশ থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়।
নিহত পোশাক শ্রমিক আবু সাঈদ নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার আলমপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। আবু সাঈদ মাওনা উত্তরপাড়া গ্রামের বাবুল সরকারের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় মেঘনা গ্রুপের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
স্থানীয়রা জানান, ওই সেলুনের মালিক নরসুন্দর (নাপিত) মো. খলিল মিয়া। সে আবু ছাঈদকে সেলুনে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন আটকানোর চেষ্টা করলে তাদেরকে অস্ত্রের ভয় দেখানো হয়।
অভিযুক্ত নরসুন্দর মো: খলিল মিয়া (২৬) সিলেটের সদর উপজেলার মসজিদ কলোনী গোটাটিকর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ মিয়ার ছেলে। স্ত্রী সন্তান নিয়ে পাশের ইব্রাহিমের বাড়িতে ভাড়া থেকে খলিল মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার আবু হানিফের দোতলা ভবনের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে জেন্টস্ পার্লার নামক একটি সেলুন পরিচালনা করতেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল হক বলেন, বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আমরা কয়েকজন রাস্তার পাশে বসেছিলাম। রাস্তার পাশে খলিল মিয়ার দোতলা সেলুন থেকে ধস্তাধস্তির শব্দ হয়। কিছু সময়পর খলিল মিয়ার গায়ে রক্তাক্ত জামাকাপড় পড়ে দ্রুত চলে যেতে দেখে আমাদের সন্দেহ হলে আমরা তাকে ডাক দেই। কিন্তু সে থামেনি। এরপর হাঁটার গতি আরও বাড়িয়ে দিলে আমরা দৌঁড়ে তার কাছাকাছি গেলে সে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
দোকান মালিকের চাচা দেলোয়ার হোসেন ফেরদৌস বলেন, ১০ দিন আগে ভাতিজা আবু হানিফের দোতলা ভবনের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সেলুনের কার্যক্রম শুরু করে। বুধবার রাতে হঠাৎ করে আশপাশের মানুষ খুন হয়েছে বলে ডাক চিৎকার শুরু করে। এরপর দোতলায় সেলুনে গিয়ে রক্তাক্ত মরদেহ ও রুমের মেঝে রক্তে ভেসে গেছে দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হতে নিহতের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খুনি ধারালো ছুরি দিয়ে গলার বেশিরভাগ অংশ কেটে ফেলে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাত করে। খুনি ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।