রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মোঃ সুমন পারভেজ রিপন (৩৮) নামের এক রোগীর ছেলেকে অফিসে ঢুকিয়ে পিটিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় রামেক হাসপাতালের ৩৯ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
আহত মোঃ সুমন পারভেজ রিপন (৩৮), সে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন পঞ্চবটি এলাকার মৃত মোতাহার হোসেনের ছেলে। তার মা পিয়ারি বেগম (৬০) রামেক হাসপাতালের ৪৯ নং ওয়ার্ডের বারান্দায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত ভূক্তভোগী রিপন জানায়, আমার মা’কে চলতি মাসের ২ তারিখে রামেক হাসপাতালের ৪৯ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করানোর পর থেকে আমি অনিয়ম দেখছি। দায়িত্বরত চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও অবহেলা করে আসছে।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসকরা রাউন্ডে আসলে আমি চিকিৎসকের কাছে জানতে চাই, আমার মা-এর আসলে সমস্যটা কি ? একটু জানাবেন ? তখন চিকিৎসক কোন উত্তর না দিয়ে তার সাথে থাকা ইন্টারনি চিকিৎসককে বোঝাতে থাকে। দ্বিতীয় বার জানতে চাইলেও তিনি কোন উত্তর না দিয়ে সাথে ইন্টারনি ডাক্তাদের সাথে কথা বলতে থাকেন।
তখন আমি চিকিৎসককে বলি, স্যার আপনি যখন ক্লাসই নিচ্ছেন তখন আমাদের সকল রিপোর্ট নিয়ে গিয়ে আপনার রুমে ইন্টারনিদের বোঝান তারপর আমাকে জানিয়েন আমার মা-এর কি সমস্যা হয়েছে।
তখন চিকিৎসক ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, আপনি নিজেকে কি মনে করেন। আমরা কি বড় ডাক্তার না। আমার যখন খুশি যেখানে খুশি সেখানে ক্লাস নিবো। আমাদের কথার ওপর নির্ভর করে, আমাদের ওপর নির্ভর করে হাসপাতাল, আমাদের যেখানে খুশি সেখানে ক্লাস নিতে পারবো। আমাদের কথা আপনাকে শুনতেই হবে বলে রিপোর্টটা ফেলে নিজ রুমে চলে যান চিকিৎসক। তারপর আমি আমার ‘মা’কে নেবুলাইজার দিই। এর ২ মিনিট পর দুইজন ইন্টারনি চিকিৎসক আমাকে ডেকে বলে, আপনার রিপোর্টগুলো নিয়ে রুমে আসেন স্যার আপনাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিবে। ওই সময় আমি ডাক্তারের রুমে প্রবেশের পর দরজা বন্ধ করে দেয়। রুমের ভেতরে ১জন আনসার, ১জন নার্স ও ৫-৬জন ডাক্তার মিলে আমাকে এলোপাথারিভাবে মারধর করে।
তিনি আরও জানান, তারা হাতের কাছে যা পেয়েছে তা দিয়ে আমাকে মারধর করেছে। এরপর মারধর শেষে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, রুমের মধ্যে যা যা হলো একদম চুপ থাকবি, বাইরে গিয়ে কিছু বলবি না। না হলে তোর মাকে এমন ইনজেকশন পুশ করবো কিছুদিনের মধ্যেই মারা যাবে বলে হুমকি প্রদাণ করেন। কেউ টের পাবে না তুই আমাদের কিছু করতেও পারবি না। তখন আমি খুড়িয়ে খুড়িয়ে হেটে বাইরে গেলে আমাকে পেছন থেকে লাথি দিয়ে বলে এভাবে না সোজাভাবে হেঁটে হেঁটে বাইরে যাবি।
তিনি আরও জানান. এই বিষয়ে আমি রামেক হাসপাতালের পরিচালক স্যারকে অভিযোগ করলে তিনি বলেন, আপনি এখন কোন ব্যবস্থা নিয়েন না। নিজের চিকিৎসা নেওয়ার পর আপনি একটি লিখিত অভিযোগ দিন। আমি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবো।
এ ব্যপারে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শামীম আহম্মেদ জানান, ডাক্তার নার্সদের কমপ্লিং হলো, রোগী ভর্তির পর থেকে রোগীর ছেলে রিপন তাদের সাথে বিভিন্ন সময় খারাপ ব্যবহার করে থাকে। বুধবার সে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ডাক্তারা তাকে মারধর করেছে। তবে ডাক্তারা রোগীর ছেলের গায়ে হাত দিয়ে ঠিক করেন নি। ভুক্তভোগী রিপন অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।