
ব্যবসায়ীক হিসাব চাওয়ায় অংশীদারকে প্রাপ্য বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ উঠেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মেসার্স আরিফ ফিলিং স্টেশনের একাংশের মালিক পরিবেশ কর্মকর্তা, তার স্ত্রী ও শ^শুরের বিরুদ্ধে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীর কটকস্থলে আজমল আলম সিদ্দিকী সোহাগ নামের এক পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও তার শ^শুর মো. হারুন বেপারী যৌথভাবে মেসার্স আরিফ ফিলিং স্টেশন নামে একটি তেলের পাম্প নির্মাণ করেন। অর্থনৈতিক সংকটের কারনে ২০১৯ সালে ব্যবসায়ের চারআনা অংশ টরকী বন্দরের মৃত. খালেক মুন্সির ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন মুন্সীর কাছে বিক্রি করেন জামাই ও শ^শুর। পরবর্তীতে ফরহাদ মুন্সি তার ক্রয়কৃত ভাগের অংশটুকু কটকস্থল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবুর রহামান ওরফে ইঙ্গুল মাঝির ছেলে মানিক মাঝির কাছে এবং ২০১৯ সালের শেষের দিকে মো. হারুন বেপারী তার অংশের চারআনা মজিবুর রহামান ওরফে ইঙ্গুল মাঝির কাছে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ের এক পর্যায়ে অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র ও অংশীদারী নিয়ে দন্ধের জেরে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকে পাম্পটি। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সালিশগনের মধ্যস্থতায় ব্যবসায়ের অংশীদার আজমল আলম সিদ্দিকী সোহাগ ও তার স্ত্রী পপি, শ^শুর হারুন বেপারী, মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবুর রহামান, মানিক মাঝির উপস্থিতিতে মজিবুর রহামানের অপর ছেলে হীরা মাঝির কাছ থেকে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিতে নগদ ৩০ লক্ষ টাকা গ্রহন করে পুনরায় ব্যবসা শুরু করেন।
মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবুর রহামান ওরফে ইঙ্গুল মাঝি অভিযোগ করে বলেন, ক্রয় সুত্রে আমি ও আমার ছেলে মানিক মাঝি আরিফ ফিলিং ষ্টেশনের অর্ধেক মালিক। এছাড়াও আমার মেঝ পুত্র হীরা মাঝি দাতা হিসেবে ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রথমে ৩০ লক্ষ এবং পরে ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই ১০ লক্ষ মোট ৪০ লক্ষ টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। ওই চুক্তিতে গৃহীতা হিসেবে হারুন বেপারী তার কন্যা পপি এবং আমার পুত্র মানিক মাঝি ও হীরা মাঝির স্বাক্ষর রয়েছে। মজিবুর রহামান আরো অভিযোগ করেন বলেন, কিছুদিন যাবত সঠিকভাবে ব্যবসার হিসাব না দেয়ায় আমার ছেলে মানিক মাঝি ব্যবসার টাকার হিসাব চাইতে যায় এবং পাম্পে কর্মরত স্টাফদের উপস্থিতিতে হিসাবের খাতায় স্বাক্ষর করে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা গ্রহন করেন। তবে আমাদের অংশিদারীত্ব থেকে বাদ দিতে অপর মালিক পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আজমল আলম সিদ্দিকী সোহাগের স্ত্রী ও হারুন বেপারী কন্যা পপিকে দিয়ে থানায় একটি চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আমার পুত্র মানিক মাঝি ও নাতী সিফাত মাঝিকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করে পুলিশ। তারা তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে ফিলিং ষ্টেশন দখল নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মুক্তিযোদ্ধা মো. মজিবুর রহামান।
অভিযোগের ব্যাপারে আরিফ ফিলিং ষ্টেশনের একাংশের মালিক পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আজমল আলম সিদ্দিকী সোহাগের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে সোহাগের স্ত্রী পপি অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, ফরহাদ মুন্সী জোর করে আমাদের কাছ থেকে মালিকানা লিখে নিয়েছেন।
এ দিকে মালিকানা চুক্তিপত্রে প্রধান স্বাক্ষী সাবেক বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান প্যাদা বলেন, ‘যখন মো. ফরহাদ হোসেন মুন্সীর সাথে চুক্তিপত্র হয় তখন আমি ১ নং স্বাক্ষী ছিলাম, সেদিন কাউকে জোর করে বা ভয় দেখিয়ে কোন চুক্তিনামা হয় নাই’।