টাকাতে শেখ মুজিবের ছবি আছে সেগুলা কিভাবে ছিড়বেন? বইতে শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে, সেগুলা কি ভাবে উঠাবেন? শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দেয়াল থেকে কেন সরানো হয়নি জানতে চাইলে ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিক এবং এলাকাবাসীকে উল্টো এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন বাগেরহাট সদর উপজেলার ক্ষুদ্র চাকশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ গোলাম রেজাউল। সদ্য বিলুপ্ত ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং অভিভাবকগণ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ নানান অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্র জনতা আন্দোলনের ফলে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের দেশত্যাগের ২৯ দিন পরেও শেখ মুজিবের প্রায় অর্ধশতাধিক ছবি টানানো দেখতে পাওয়া যায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে। বিষয়টি দেখে ক্ষুব্ধ হয় এলাকাবাসী। তারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষক শেখ গোলাম রেজাউলের অন্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন। তারা বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের বারান্দার টিন, মাঠে একাধিক বড়-বড় গাছের গুড়ি থাকলেও গাছ নাই কেন এবং খেলার মাঠের নাজুক অবস্থা ও ক্লাব কেন দোকান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চান।
স্থানীয় কামরুজ্জামান ডাবলু বলেন, শেখ গোলাম রেজাউল বিদ্যালয়ে যোগদানের পর হইতে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সহায়তায় নানান দুর্নীতি ও অপকর্ম করেছেন। স্থানীয় লোকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী দিয়ে মারপিট ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। তার ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনা। তিনি আরও বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে তাকে বিচারের আওতায় আনা হোক এটায় আমাদের প্রত্যাশা।
স্থানীয় শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ গোলাম রেজাউল এবং বিদ্যালয়ের দপ্তরি দুজনে মিলে বিদ্যালয়ের টিন ও গাছ আত্মসাৎ করেছে। পাশের ক্লাব টিকে দোকান হিসেবে ব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা দিয়ে তার ব্যক্তিগত খামারে চলে যান। সে শুধু অফিস মেইনটেইন্স করে , কোন ক্লাস নেয় না। তার দুর্নীতি অনিয়মের শেষ নেই। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
সদ্য বিলুপ্ত হওয়া বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বিউটি রানী দাস বলেন, এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ গোলাম রেজাউলই সব। তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আমরা কমিটির লোক হলেও আমাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। স্থানীয় প্রায় প্রত্যেকের সাথেই দুর্ব্যবহার করেছে সে। সে এখানকার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে সখ্যতা রেখে অন্যান্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে। দুর্নীতি অপকর্ম অনেক করেছে, তার বিচার হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, গত আগস্ট মাসের ৫ তারিখের পর আমরা এধরনের সকল ছবি সরানোর কথা বলেছি। তিনি যদি ছবি রাখেন সে দায় তার। প্রধান শিক্ষকের সাংবাদিকের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে যাওয়াটা ঠিক হয়নি। আমি খোজ নিয়ে দেখছি, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Please follow and like us: