
খুলনার ডুমুরিয়ায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রবেশ পথ বন্ধ করে দিয়ে ব্যবসা করছে গরু ব্যবসায়ীরা, এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসা রোগীরা। উপজেলার মাগুরাঘোনা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের দীর্ঘ দিনের চিত্র এটি। মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের আঁঠারোমাইল বাজারের খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন পূর্ব পার্শ্বে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অবস্থিত। সপ্তাহের প্রতি সোমবার আঁঠারোমাইল বাজারে গরুহাট বসে, যা সকাল থেকে শুরু করে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আর এই সোমবার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রবেশের একমাত্র ফটকটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়ে গরু বেচাকেনা করে গরু ব্যবসায়ীরা।
এলাকাবাসীর এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এসময় গরু ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা সাংবাদিকদের বলেন, সপ্তাহে একদিন এটা সহ্য করতে হবে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃ সোহরাব হোসেন বলেন, ইউনিয়নের প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ এখানে সেবা নিতে আসে। যাদের মধ্যে গর্ভবতী মহিলা, বৃদ্ধ ও ছোট শিশুরাও রয়েছে। কিন্তু সোমবারে এখানে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাতে সেবা নিতে রোগীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে একজন গর্ভবতী মহিলা গরু আর মানুষের ভিড় ঠেলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসার সময় গরুর ধাক্কায় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলার মিটিং এ আলোচনা করেছি। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিবার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ তানভির আহম্মেদ বলেন, উপজেলা সমম্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফটকের দুই পার্শ্বে বাঁশ অথবা রড দিয়ে রেলিং করে দিতে বলেছিলেন, কিন্তু চেয়ারম্যান সেটা কেন করেননি তা আমি জানিনা।
এ ব্যাপারে মাগুরাঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা শেখ রফিকুল ইসলাম হেলাল বলেন, এটি একটি বড় গরু হাট একারনে সব ঠিক রাখা যায় না। তবু আমি চেষ্টা করছি কতদুর কি করা যায় দেখি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আঁঠারোমাইল হাটের ইজারাদার চেয়ারম্যানের একজন নিকটতম লোক। তাকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান হেলাল নেপথ্যে থেকে এই হাট পরিচালনা করেন, এজন্যে তিনি কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
বিষয়টি সম্পর্কে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, এব্যাপারে আমাকে আগে কেউ অবহিত করেনি। তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রবেশ পথ বন্ধ করে কোন অবস্থায় ব্যবসা করা যাবে না, এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
Please follow and like us: