
ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দলবেঁধে বোরো ধানের চারা লাগাতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তাড়াশ চলনবিলে একমাত্র অর্থকরী ফসল হিসেবে বোরো ধানই ভরসা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাটি বোরো চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় অধিকাংশ কৃষক কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় আবহাওয়া ভালো থাকায় উপজেলায় এবার বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে যাবে বলে অনেকেই মনে করছেন। তাড়াশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১১’শ ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে ধান রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে জিরা শাইল জাতের ব্রি-২৯, ব্রি-৫৮, ব্রি-৭৪, ব্রি-৮১, ব্রি-৮৪, ব্রি-৮৬, ব্রি-৮৮, ব্রি-৮৯ ধানসহ অন্যান্য জাতের ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে।
উপজেলার গুল্টা গ্রামের কৃষক আফসার আলী জানান, এলাকায় শ্রমিক সংকটে বেশি মজুরি দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। দিনরাত পরিশ্রম করে নিয়মিত পরিচর্যাও করা হচ্ছে। এ ছাড়াও গতবছরের চেয়ে এবছর খরচ বেশি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কেউ কেউ তীব্র শীত উপেক্ষা করে বীজতলা থেকে চারা তুলে জমা করছেন। আবার কেউ পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করে জমি তৈরি করছেন। আবার কোথাও কোথাও কৃষকরা তাদের তৈরিকৃত জমিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। কোথাও গভীর অথবা অগভীর সেচযন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি তুলছেন। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, শীতের তীব্রতা একটু কমে গেলেই কৃষকরা পুরো দমে নেমে যাবে মাঠে। সেই হিসেবে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে শতভাগ জমিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ কাজ সম্পন্ন হবে ধারণা করা যাচ্ছে। এদিকে বোরে চাষিরা যেন সঠিকভাবে ফসল চাষাবাদ ও পরিচর্যা করতে পারে, সে দিকে লক্ষ রেখে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তৃণমূল পর্যায়ে কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মাঠে গিয়ে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১’শ ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের আশা করা হচ্ছে। উপজেলার সকল কৃষকদের বোরো ধান চাষে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাকি জমির রোপণ কাজ শেষ হবে। রোপণ শেষ হলে পরবর্তীতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য আলোক ফাঁদ ও পার্চিং পদ্ধতি স্থাপন করা হবে।
Please follow and like us: