ইমরান হোসেন (দোহার উপজেলা প্রতিনিধি, ঢাকা)
শব্দদূষণ’কে নীরব ঘাতক হিসেবে ধরা হয়। আমাদের দেশে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণ। যা রীতিমতো দুশ্চিন্তার বিষয়। প্রতিদিন আমরা নানা কারণে-অকারণে শব্দদূষণ করে থাকি। যা আমাদের নিজের জন্যই ক্ষতিকর। গাড়ির হর্ন, কলকারখানার শব্দ, মাইকের শব্দ, কনসার্ট, মেলা, যাত্রাগান ইত্যাদির মাধ্যমে শব্দদূষণ বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষ সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ ডেসিবেল শব্দে কথা বলে। ৭০ ডেসিবেল পর্যন্ত মানুষের কান গ্রহণ করতে পারে এবং ৮০ ডেসিবেলের উপরে গেলেই ক্ষতি শুরু হয়। যা মানুষকে বধির করে দেয়।
বিধিমালা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত নয়টা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় বিপরীত চিত্র। আবাসিক এলাকা হোক কিংবা বানিজ্যিক এলাকা, সবখানেই চলে ইচ্ছেমতো শব্দদূষণ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, অফিস-আদালত কোন স্থানেই কার্যকর হয়না কোন বিধিমালা, আইন-কানুন ! চালকদের খামখেয়ালি ও অসচেতনতার ফলে শব্দদূষণ বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে মানুষের কানের নানান জটিল রোগ। কম বয়সে বধির হয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষ। আর এতে বাদ যাচ্ছে না শিশু ও বৃদ্ধরাও। আপনার হর্ন, আপনাকেও বধির করতে পারে। এটাও প্রতিটি চালকের মাথায় রাখা উচিত।
শব্দদূষণ হ্রাস করতে হলে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। চলমান আইন কার্যকর করতে হবে তৃনমুল পর্যায়ে। শব্দ দূষণে দোষী হিসেবে প্রমাণিত হলে প্রথম অপরাধের জন্য একমাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা দু ধরনের দণ্ডই প্রদান করার বিধান রয়েছে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা দশ (১০) হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেয়ার কথা বলা রয়েছে। প্রয়োজনে এই আইন আরও কঠোর করতে হবে। পাশাপাশি চালক ও সমাজের মানুষদের সবাইকে শব্দদূষণ প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ই অক্টোবর ২০২৩ ইং রবিবার, শব্দদূষণ প্রতিরোধে জনসচেতনতার লক্ষে সকাল ১০:০০ টা থেকে ১০:০১ মিনিট পর্যন্ত নীরব মিনিট পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আসুন সকলে মিলে উক্ত নীরব মিনিট পালন করি এবং ঐ-সময়ে সকল প্রকার হর্ন ও শব্দদূষণ থেকে নিজেকে বিরত রাখি।
Please follow and like us: