দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ফলন ভালো হওয়ায় উপজেলার হাট বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। বর্তমানে প্রতিকেজি সবজি মিলছে ১০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দামে সাধারণ মানুষ যখন প্রায় হিমশিম,তখন সবজির দাম কমে যাওয়ায় বাজারে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতার।
ফুলবাড়ী পৌর সবজি বাজারের সবজি বিক্রেতারা জানান, এ বছর সবজির ফলন ভালো হয়েছে। সরবরাহ বাড়ায় দামও কমেছে। সোমবার সকালে ফুলবাড়ী পৌর শহরের পাইকারী সবজি বাজার সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা মিলছে ।
গত কয়েক দিন ধরে বাজারগুলোতে শীতকালীন, লাল শাক, পালং শাক,পাতা পেঁয়াজ, ধনিয়া পাতা, লাউ, লাউ শাক, কুমড়া শাক, বরবটি, গাজর, টমেটো, শালগম, শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা, কাঁচা মরিচ, বেগুন, করল্লা, মিষ্টি কুমড়ার সরবরাহ বেড়েছে। সবজির মধ্যে প্রতি পিস বাঁধাকপি আকার ভেদে ৭-৮ টাকা ও ফুলকপি আকার ভেদে ৫-৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ আগেও এর দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। বিভিন্ন ধরনের বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা কেজি দরে, শিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি দরে। মুলা ১০ টাকা কেজিতে আর মিষ্টি কুমড়া আকার ভেদে ১৫-২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। শশা পাওয়া যাচ্ছে প্রতিকেজি মানভেদে ১৫-১৮ টাকায় । এ ছাড়া কাঁচা মরিচের দাম ৮০ টাকা থেকে কমে ২২ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে নেমেছে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। গাঁজর ৩০-৪৫ টাকা এবং টমেটো ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। নতুন আলু প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
বাজারে সবজি কিনতে আসা মোঃ মাহাবুর রহমান বলেন, প্রথম দিকে একটু চড়া হলেও শীতকালে সবজির দাম প্রতিবছরই কম থাকে। এখন ১০০ টাকার সবজি বাজার করলেই ব্যাগ ভরে যাচ্ছে। আগে ৩০০-৪০০ টাকার বাজার করলেও এতগুলো পাওয়া যেত না। সব সবজির দামই কমতে শুরু করছে।
পৌর বাজারে সবজি বিক্রেতা উজ্জল বলেন, এ বছর শীতের সবজির ফলন ভালো হয়েছে। সব রকমের সবজির আমদানী বেড়েছে তাই আমরাও কম দামে কৃষকদের থেকে নিতে পারছি। এর ফলে অল্প লাভ করেই বিক্রি করতে পারছি। কয়েকদিন পর সবজির দাম আরও কমতে পারে।
উপজেলার সিদ্দিশী গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ জানান, তিন বিঘা জমিতে শীতকালীন ফসল বাঁধাকপি, ফুলকপি, শসা, টমেটো, লাউ ও শাক সবজির আবাদ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমের দিকে দাম বেশি পেলেও বর্তমানে দাম অনেক কম।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ রুম্মান আক্তার বলেন, এবছর উপজেলার ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির চাষ করেছে। এতে ফলন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৪ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪২ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। শীতের শুরুতে কৃষকরা সবজি বিক্রি করে বেশ লাভভান হয়েছেন বলেও জানান তিনি।