খোকন হাওলাদার, বরিশাল থেকে :- ছয় সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে সামনে রেখে উষ্ণতা বাড়ছে রাজনীতিতে। যেকোনো মুহূর্তে ঘোষণা হতে পারে তফসিল। তাই নগর পিতার আসনে বসতে দলীয় মনোনায়ন পাওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে প্রার্থীদের। বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনকে সামনে রেখে আলোচনায় রয়েছেন ২০ দলীয় জোট ও মহাজোটের প্রার্থীরা। তবে লড়াইটা যে ক্ষমতাসীদের জন্য মসৃণ নয়, তা বলে দেয় ২০১৫ সালের বিসিসি নির্বাচনের ইতিহাস। আধুনিক বরিশাল রূপকার ও জননন্দিত মেয়র হয়েও প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণ সেই নির্বাচনে ১৬ হাজার ৯৪৬ ভোটে হেরে যান বিএনপি’র প্রার্থী ও বর্তমান সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামালের কাছে। যদিও হেফাজত ইস্যুতে প্রভাবিত ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট বাড়ার বিষয়টিও সামনে বেড়িয়ে আসে। এদিকে একক প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছেলে যুবনেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র নাম ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একক সিদ্ধান্ত হলেও মহাজোটের শরীক দলগুলো এখনো সমর্থন দেয়নি। ঘোষণা করা হতে পারে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে মেয়র প্রার্থীর নাম। এরইমধ্যে বাসদের প্রার্থী হিসেবে তরুণ নারীনেত্রী ডা. মনিষা চক্রবর্তী ও সিপিবির প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট এ কে আজাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে প্রথমবারের মতো মেয়র প্রার্থী হিসেবে কোনো নারী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করায় আলোচনায় রয়েছেন ডা. মনিষা চক্রবর্তী। দল চাইলে নির্বাচন করতে দ্বিমত নেই জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি কর্নেল (অব) জাহিদ ফারুক শামীমও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহামুদুল হক খান মামুনের। অপরদিকে, এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা কিংবা চূড়ান্ত করেনি ২০ দলীয় জোট। শোনা যাচ্ছে, ২০০৩ সালে বিসিসিকের প্রথম নির্বাচনে চারদলীয় জোট প্রার্থী হয়ে বিজয়ী ও বর্তমান বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার প্রার্থী হতে চান না। তবে বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামালের হঠাৎ করে দলীয় কর্মসূচিতে বেশি অংশ নেওয়াতে বোঝা যাচ্ছে তিনি আবারো প্রার্থী হতে চাইছেন। তার সঙ্গে প্রার্থীর খাতায় যুক্ত হয়েছে- কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস জাহান শিরিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহিন, বর্তমান প্যানেল মেয়র ও মহানগর বিএনপির সহসভাপতি কেএম শহিদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আলতাফ মাহমুদ সিকদার ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেত্রী আফরোজা খানম নাছরিনের নাম। অপরদিকে জোট-মহাজোটের বাহিরে এককভাবে প্রার্থী দিচ্ছেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া হলে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও অংশ নেবে বিএনপি। অপরদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, মনোনায়ন যে কেউ চাইতে পারেন, কিন্তু আমরা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দাবির মুখে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যুগ্ম আহ্বায়ক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র নাম মেয়র প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে পাঠিয়েছি।