কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ২৪ ঘন্টায় পুকুরের পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলো; শুভপুর ইউনিয়নের উনকোট গ্রামের মোঃ ফারুকের ছেলে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বৈলপুর গ্রামের শিক্ষক শিপন আবেদীনের মেয়ে আতিফা আবেদীন ইশরা ও চিওড়া ইউনিয়নের ছোট সাতবাড়িয়া গ্রামের আবদুল কাদির সুফলের ছেলে সাইফুল ইসলাম নীরব। সোমবার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নিহতদের স্বজন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকবৃন্দ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুভপুর ইউনিয়নের উনকোট গ্রামে দেড় বছর বয়সী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সোমবার দুপুরে খেলার ছলে বাড়ির পাশের ছোট পুকুরে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর গুরুতর আহত অবস্থায় ভাসতে দেখে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সকালে চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার পশ্চিম চান্দিশকরায় নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পুকুরের পানিতে পড়ে মারা গেছে দেড় বছর বয়সী আতিফা আবেদীন ইশরা নামে এক কণ্যা শিশু। পরিবারের সবার অগোচওে সে বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে যায়। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে উদ্ধার শেষে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এরআগে রোববার দুপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে সাইফুল ইসলাম নীরব নামে আট বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চিওড়া ইউনিয়নের চাপিরতলা গ্রামে নানার বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবে তাঁর মৃত্যু হয়। আদরের তিন সন্তানকে হারিয়ে পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম। বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন গর্ভধারিনী মায়েরা। শোকে স্তব্দ তিনজনের বাবা।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, মোবাইল আসক্তির কারণে ছোট শিশু সন্তানের প্রতি খেয়াল কমছে মায়েদের। শিশুরা একটু ঘরের বাইরে গেলে খেলার ছলে বাড়ির পাশ^বর্তী গর্ত, ডোবা বা পুকুরে পড়ে যায়। এছাড়া ৭-১০ বছর বয়সী শিশুরা পুকুরে গোসল করতে নেমে বা পড়ে গেলে সাঁতার না জানার কারণে অতিরিক্ত পানি খেয়ে ভেসে উঠে। দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুজির পর শিশুদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রায় ৯৫ শতাংশ শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সাঈদ আল মানসুর বলেন, ‘ইদানিং পানিতে ডুবে বেশি পরিমান শিশু মারা যাচ্ছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু কমাতে ছোট শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের বেশি খেয়াল রাখা উচিত’।