রাজশাহীর আমের বাজার থেকে এরই মধ্যে বিদায় নিয়েছে জাত আম খ্যাত গোপালভোগ, মোহনভোগ, কালিভোগ, লক্ষ্মণভোগ, হিমসাগর। বিদায়ের পথে রয়েছে সুস্বাদু ল্যাংড়া আম। এখন বাজারে অল্প-স্বল্প ল্যাংড়া আম পাওয়া গেলেও দাম বেশি। বাজার এখন বলা যায় আ¤্রপালি ও ফজলির দখলে। আর কয়েক দিন বাদেই উঠবে আশ্বিনা আম।
বছরের এ সময়ে রাজশাহীর গ্রামীণ জনপদের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে আমকে ঘিরেই। গ্রামের প্রান্তিক আম চাষি থেকে শুরু করে বেকার যুবক কারোরই ফুরসত থাকে না। এক মৌসুমে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্য হয় রাজশাহী অঞ্চলে। এবার তীব্র তাপপ্রবাহ ও খরার পরও ফলন ভালো হয়েছে। তাই বাজারের ঝুড়িতে এখনও শোভা পাচ্ছে কয়েক জাতের আম। যদিও এখন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার আমই বেশি পাওয়া যাচ্ছে রাজশাহীর বাজারে। তবে দাম বেশি হওয়ায় আমের পাইকারি আড়ত ও খুচরা দোকানে ক্রেতা কম।
এর মধ্যে পরপর দুইদিন ভারী বৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে। তাই এই কারণেও আমের ক্রেতা কমেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় আম নিয়ে বসে থাকছেন। কিন্তু কেনার মতো তেমন ক্রেতা পাচ্ছেন না। এর প্রভাব পড়েছে পাইকারি বাজারেও।
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর। সেখানেও এখন ক্রেতা কমেছে। এজন্য বাড়তি দাম ও বৃষ্টির কথাই বলছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
ঈদের পর থেকেই আমের বাজারে ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানান আম ব্যবসায়ী শাহীন ও তুহিন। তারা বলেন, ঈদের সময় অন্যান্য বছর বেশি আম বিক্রি হয়। কারণ অনেকেই ঈদ করতে বাড়িতে এসে রাজশাহীর আম ঢাকা নিয়ে যান। কিন্তু এবার লোকজন কম। ক্রেতাদের অভিযোগ দাম বেশি। কিন্তু তাদের এখানে করার কিছু নেই। তারা সামান্য লাভে আম বিক্রি করে থাকেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) মোজদার হোসেন বলেন, রাজশাহীর ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮৬টি আম গাছ রয়েছে। গত বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান ছিল। এবার বাগান বেড়েছে ১ হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে। এবার হেক্টর প্রতি ১৩ দশমিক ২০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এবার মোট ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ টন আম উৎপাদন হবে। এবার ৯৫ শতাংশ গাছেই মুকুল এসেছিল। তাই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে এবং তা ছাড়িয়েও যেতে পারে।