রাজশাহী মহানগরীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তানভীর আহম্মেদ (১৯), নামের এক শিক্ষার্থীকে অটো রিক্সায় তুলে নিয়ে ছিনতাইয়ে ঘটনায় দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারী) দিনগত রাত সোয়া ৭টায় মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার সাগরপাড়া পিডিবি অফিসের গলিতে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তানভীর আহম্মেদ, তিনি মহানগরীর মতিহার থানার মির্জাপুর পূর্বপাড়া এলাকার মোঃ মাহতাব আলীর ছেলে এবং এনএসআরটিসি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, রাজশাহীতে সিএইচটি বিভাগে পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।
গ্রেফতারকৃত দুই (ভুয়া ডিবি) ছিনতাইকারীরা হলো: মোঃ নূরনবী চাঁদ (৪০), সে মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার বোষপাড়া তেতুলতলা এলাকার মৃত নুরুল হুদার ছেলে ও মোঃ রাব্বী মৃদুল রহমান (২৪), সে একই থানার দরগাপাড়া এলাকার মোঃ রতন শেখের ছেলে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তানভীর আহম্মেদ জানায়, বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যা ৭টায় সাহেব বাজারে ব্যক্তিগত কাজ শেষে অটোরিক্সাযোগে বাসায় ফিরছিলাম। পথে মহানগরীর কেদুড় মোড় সংলগ্ন মহাসড়কে পৌঁছালে দুইজন ব্যক্তি অটোরিক্সার গতিরোধ করে আমাকে অটোরিক্সা থেকে নামায়। এ সময় তারা নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বলে তোমার কাছে অবৈধ মাদকদ্রব্য রয়েছে। আমি মাদকদ্রব্য নেই বলার পরও তারা বলে থানায় যেতে হবে। এক পর্যায়ে আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবী করে এবং জোর পূর্বক রিক্সায় তুলে নিয়ে সাগরপাড়া পিডিবি অফিসের গলি পথের শেষ মাথায় নিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে আমার মোবাইল কেডে নেয়। সেখানে একটি বিকাশের দোকানে আমার মোবাইলের বিকাশ এ্যাকাউন্ট থেকে ৩,৮০০/- টাকা উত্তোলন করে এবং মানিব্যাগ থেকে নগদ ৮০০/-টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এরপর আমি আমার বন্ধুদের ডেকে বোয়ালিয়া থানায় গিয়ে ওসি হুমায়ুন কবির সাহেবকে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলি। তিনি তৎক্ষণাত ঘটনাস্থলে গিয়ে বিকাশের দোকানের সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেন এবং আমাকে সঙ্গে নিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে আলুপট্টি মোড় থেকে আমার সনাক্ত মতে (ভুয়া ডিবি) ছিনতাইকারী মোঃ নূরনবী চাঁদকে গ্রেফতার করেন। পরে গ্রেফতার ছিনতাইকারীকে সাথে নিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে অপর ভুয়া ডিবি পুলিশ ছিনতাকারী মোঃ রাব্বী মৃদুল রহমানকে গ্রেফতার করেন বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে সেকেন্ড অফিসার এসআই ইফতেখার আলম, বোসপাড়া ফাড়ির ইনচার্জ মোঃ সাইদুজ্জামান ও সঙ্গীয় ফোর্স।
জানতে চাইলে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), মোঃ হুমায়ুন কবির জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তানভীর আহম্মেদ নামের এক শিক্ষার্থীকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাদী হয়ে একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেন। মামলার পরই আমি নিজে থানার অন্যান্য অফিসারদের নিয়ে বিকাশের দোকানের সিসি ক্যামেরা দেখে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করি। এরপর পুরো নগরীজুড়ে অভিযান পরিচালনা করে বাদীর সনাক্ত করা ও ভিডিও ফুটেজের সাথে চেহরার মিল দেখে দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা তাদের দোষ স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।