গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের পাখি শালায় প্রথম বারের মত ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়েছে ম্যাকাও। আট-দশদিন আগে বাচ্চার জন্মের বিষয়টি টের পায় পার্ক কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতির সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক এবং সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক ইমরান আহমেদ। দেশে এর আগে ম্যাকাও পাখি কোথাও বাচ্চা দেয়নি বলে জানান তিনি।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, নীল ও হলুদ পাখিগুলো দক্ষিণ আমেরিকার অ্যামাজন বনে জন্মে। ম্যাকাও পাখির দৈর্ঘ্যে ৭৬ থেকে ৮৬ সেমি এবং ওজনে ৯০০-১৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হযে থাকে। এরফলে পাখিটি তাদের পরিবারের অন্যতম বৃহৎ প্রজাতির পাখি হিসেবে বিবেচিত। নীল রঙের ডানা ও লেজ, ঘন নীল চিবুক, নিচের দিকে সোনালী রঙ এবং মাথার দিকে সবুজাভ রঙে সজ্জ্বিত এ পাখিটির নজরকাড়া সৌন্দর্য্য সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। চঞ্চুগুলো কালো রঙের হয়। আবার চোখের নিচে মুখাকৃতি সাদা রঙের। নীল ও হলুদ ম্যাকাও পাখি তার বিপরীত লিঙ্গীয় সঙ্গীকে নিয়ে সারাজীবন একত্রে থাকে। মৃত গাছে এদের বাসা থাকে। স্ত্রী পাখিটি সচরাচর দুই থেকে তিনটি ডিম দিয়ে থাকে। প্রায় আটাশ দিন স্ত্রী পাখিটি ডিমে তা দেয়।
কর্তৃপক্ষ আরোও জানায়,পুরুষ বাচ্চাকে শুরু থেকেই রঙের মাধ্যমে নির্ধারণ করা যায়। উজ্জ্বল ও ঘন রঙের মাধ্যমেই পাখির লিঙ্গ নিরূপিত হয়। এরা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের বীজ,বাদাম,ফল,বেরী,পাতা ও অন্যান্য গাছপালা খায়। এরা গড়ে ৬০-৬৫ বছর বাঁচতে পারে,তবে কিছু কিছু প্রজাতি ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। এদের দেহ পালক দ্বারা আবৃত থাকলেও এদের একটি প্যাটার্ন রয়েছে। দুইটি ম্যাকাও পাখি কখনই একই প্যাটার্ন এর হয় না। বিষয়টি অনেকটা মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর মত। দুই জন মানুষের ফিঙ্গারপ্রিন্ট যেমন এক হয় না তেমনি ভাবে দুইটি ম্যাকাউ পাখির পালকের প্যাটার্ন ও তেমন এক হয় না। এরা সামাজিক ভাবে একত্রে থাকা পছন্দ করে। এরা সাধারনত উন্মুক্ত পরিবেশে একত্রে দলবেধে উড়ে।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতির সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক ইমরান আহমেদ জানান, দেশে প্রথমবারের মতো দেশীয় পরিবেশে ম্যাকাও পাখির ছানার জন্ম হওয়ায় খুবই ভাল সংবাদ। আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতেও এ ধরনের সুসংবাদ দিতে পারব । একটি বাক্সের ভেতর আছে ম্যাকাও ছানা, বাক্সের বাইরে পাহারা দিচ্ছে তার বাবা -মা। বাচ্চাটির প্রতি বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।