১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ৩০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-
  • হোম
  • নাগরিক দূর্ভোগ
  • অর্থাভাবে আট বছর ধরে অসম্পুর্ণ সেতু নির্মাণ কাজ ভোগান্তিতে ১৬ গ্রামের মানুষ ॥




অর্থাভাবে আট বছর ধরে অসম্পুর্ণ সেতু নির্মাণ কাজ ভোগান্তিতে ১৬ গ্রামের মানুষ ॥

মোঃ আবু শহীদ, ফুলবাড়ী,দিনাজপুর করেসপন্ডেন্ট।

আপডেট টাইম : জানুয়ারি ১৯ ২০২৫, ২৩:০৩ | 624 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অর্থাভাবে আট বছর ধরে অসম্পুর্ণ হয়ে পড়ে আছে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ। সেতুটির অভাবে ছোট যমুনা নদীর দুই পাড়ের প্রায় ১৬ গ্রামবাসীকে জরুরি প্রয়োজনে দুই কিলোমিটারের পথ ঘুরতে হচ্ছে ৭ কিলোমিটার। এতে অর্থ ও সময় দুই-ই নষ্ট হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে নদীর দুইপাড়ের গ্রামবাসীকে। গত আট বছর আগে গ্রামবাসীদের দুদর্শা লাঘবের কথা চিন্তা করে দৌলতপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম ও সহযোগিতায় নদীতে ছয়টি রডসিমেন্টের পিলার দিয়ে তার উপর বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী একটি সেতু নির্মাণ করে পারাপারের ব্যবস্থা করলেও সেটিও এখন রোদ বৃষ্টিতে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। অর্থাভাবে সেতুটির বাকি কাজ সম্পুর্ন করা সম্ভব হয়নি। সরকারিভাবে বরাদ্ধ দিয়ে সেতুটির বাকি কাজ সম্পুর্ণ করলে নদীর দুই পাড়ের মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ থাকবে না বলে দাবী স্থানীয়দের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ৬নং দৌলতপুর ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদীর পূর্বপ্রান্তের পলিপাড়া ও পশ্চিমপ্রান্তে হরহরিয়াপাড় এলাকার মধ্যে অস্থায়ী একটি সংযোগ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটির দুইপাড় বাঁধানোসহ সাতটি সিমেন্টের পিলার দেয়া আছে, এর উপরে দেয়া রয়েছে বাঁশ ও কাঠের তৈরী পাটাতন। সেটিও রোদ-বৃষ্টিতে বাঁশ-কাঠের খুঁটিসহ পাটাতনগুলো পচে নড়বড়ে হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। কিছু কিছু জায়গা পচে নষ্ট হয়ে ভেঙে গেছে। তা দিয়েই কোন রকমে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন স্থানীয়রা। সেখানে স্থায়ী একটি সেতু না থাকায় নদীর পূর্ব পাড়ের পলিপাড়া, চকপলিপাড়া, হিন্দুপাড়া, চকপাড়া, ডাড়ারপাড়, চন্ডিপুর, দুর্গাপুর, বারাইপাড়া ও বৈরাগীপাড়া এলাকাবাসীকে জরুরি প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদে কাজের জন্য নদীর পশ্চিম পাড়ের দৌলতপুর এবং হাটবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়সহ এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য মাদিলাহাট ও খয়েরবাড়ি হাটে যেতে দুই কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে সাত কিলোমিটার। এতে এলাকাবাসীর অর্থ ও সময় দুই-ই নষ্ট হচ্ছে। একইভাবে নদীর পশ্চিম পাড়ের হরহরিয়াপাড়া, গোয়ালপাড়া, মধ্যমপাড়া, পানিকাটা, মন্ডলপাড়া, ডাঙ্গা, চেয়ারম্যানপাড়া ও কুশলপুর গ্রামবাসীকে পূর্ব পাড়ের পার্শ্ববর্তী বিরামপুর, নবাবগঞ্জ যেতে হলে ঘুরতে হচ্ছে ৭কিলোমিটার পথ।
স্থানীয়রা বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ মাস্টার নিজ উদ্যোগে পলিপাড়া ও হরহরিয়া পাড়ার মধ্যে নদী পারাপারে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ছোট যমুনা নদীর ওপর ছয়টি পিলার ঢালাই দেয়। অর্থাভাবের কারনে সেতুটির বাকিকাজ সম্পুর্ণ করতে পারেনি। পরে তার উপর বাঁশ ও কাঠের পাটাতন দিয়ে অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে রোদ-বৃষ্টিতে বাঁশ-কাঠের খুঁটিসহ পাটাতনগুলো পচে নড়বড়ে হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসী ওই নড়বড়ে সেতুর ওপর দিয়ে কোন রকমে চলাচল করতে পারলেও যান বাহন নিয়ে চলাচল করতে ঝুকিতে পড়তে হয়, যে কোন সময় সেটি ভেঙে পড়তে পারে।
হরহরিয়ারপাড়া গ্রামের শমসের আলী, অর্চনা রাণী, খয়েরবাড়ী এলাকার রফিকুল ইসলাম, পূর্বপ্রান্তের স্বদেশ দাস ও কনক রায় বলেন, একটি সেতুর অভাবে ইউনিয়ন পরিষদের জরুরি কাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ হাটবাজারে কৃষি পণ্য নিয়ে যেতে দুই কিলোমিটারের পথ ঘুরতে হচ্ছে ৭কিলোমিটার পথ। সরকারি বরাদ্ধ দিয়ে যদি সেতুটির বাকি কাজ সম্পন্ন করা যায় তবে এলাকাবাসীর অনেক উপকার হবে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ মন্ডল মাস্টার বলেন, আট বছর আগে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করেই নিজ উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগিতা এবং স্বেচ্ছাশ্রমে রড ও সিমেন্টের ছয়টি পিলারসহ বাঁশ-কাঠ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়। তাতে করে প্রায় ১৫লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আর মাত্র ১০লাখ টাকা খরচ করলেই সেতুটির উপরের পাটাতনসহ বাকি কাজ সম্পুর্ণ করা যেত, তা আর হয়ে উঠেনি। অনেকবার স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদে কথা বলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। কারন হিসেবে তিনি বলেন, স্থানীয় রাজনীতিবীদরা তাদের ক্রেডিট পাবেনা বলে সেতুটি ব্যাপারে কোন আগ্রহ দেখায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শফিকুল ইসলাম বলেন, সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো, যদি সেতুটির কাজ কোন প্রকল্পের অর্থ দিয়ে করা না হয়ে থাকে তবে ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলে সেতুর বাকি কাজ সম্পুর্ণ করার চেষ্টা করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না, সেতুটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে কি করা যায় দেখবো।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET