
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে অজ্ঞাতনামা প্রতারক কর্তৃক প্রযুক্তিগত কৌশলের মাধ্যমে একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সোনালী ব্যাংক একাউন্ট থেকে ১৫ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে স্থানান্তরের চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গেছে। প্রতারণার শিকার উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের দানাবীর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের পুত্র দানাবীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস সামাদ জানান, গত ১০ এপ্রিল বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে অজ্ঞাতনামা দুইজন ব্যক্তি তাকে ডাকাডাকি করলে তিনি তৎক্ষনাত শয়নঘর হতে বের হয়ে ডাকার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদ্বয় প্রথমে প্রতিবেশী এক মেয়ে সম্পর্কে তথ্য জানতে চায়। শিক্ষক আব্দুস সামাদ ওই মেয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে শুরু করলে অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি বলে, মোবাইল ফোনে জরুরীভিত্তিতে কথা বলা প্রয়োজন কিন্তু তার ফোনে ব্যালেন্স নাই। তখন শিক্ষক আব্দুস সামাদ সরল বিশ^াসে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে দেয়। ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোনে কথা বলার ভান করে কৌশলে তার বাড়ীর পাশে যায় এবং অপর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিটি আঃ সামাদের সাথে বিভিন্ন ধরণের আলাপ করতে থাকে। পরে ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি আঃ সামাদের নিকট এসে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটির সিম খুলে নিয়ে অন্য খালি সিম ঢুকিয়ে দিয়ে মোবাইলটি তাকে দিয়ে চলে যায়। পরে রাত প্রায় ৮ টার দিকে তার মোবাইল ফোনে সেভকৃত কোন নাম্বার দেখতে না পেয়ে পাশর্^বর্তী একটি দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে জানতে পারেন তার ব্যবহৃত মোবাইলে থাকা সিম নাম্বার ০১৭৩১-৩৫৬২৬৩ এর পরিবর্তে সিম ০১৭৫৩-৯৭৫৯৩১ ঢোকানো হয়েছে। এমতাবস্থায় তিনি গত ১৩ এপ্রিল সকালে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সোনালী ব্যাংক পিএলসি, আটোয়ারী শাখা পঞ্চগড় এসে নিজ একাউন্ট নাম্বার ১৯০২১০০০০৩২৯২ হতে টাকা উত্তোলন করার সময় আটোয়ারী সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার জানায় তার একাউন্ট হতে গত ১০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ১৫ লক্ষ টাকা একাধিক একাউন্টে অ্যাপসের মাধ্যমে ট্রান্সফার করা হয়েছে। তার মধ্যে একাউন্ট নাম্বর ১৯০৭৫০১০২৬২৮৬ সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ শাখা, যার একাউন্ট ব্যক্তির নাম মোঃ মঞ্জু আলী, পিতা মোঃ ইদ্রিস আলী, মাতা মোছাঃ নাদেয়া বেগম, সাং- খুটামারা (ডাঙ্গাপাড়া) ডাকঘর-দেবীগঞ্জ, এনআইডি নং- ১৯৮৮৭৭১৩৪৫৮৪৫৮৮৪৩, স্মার্ট নং- ৫৫২০৪৬২৯৫৯ উপজেলা-দেবীগঞ্জ। এ একাউন্টে চার ধাপে মোট ১০ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার হয়েছে। ব্যাংক স্টেটম্যান্ট অনুযায়ী উক্ত একাউন্ট সহ আরো একটি একাউন্টে বাকী পাঁচ লক্ষ টাকা সহ সর্বমোট ১৫ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার হয়েছে। এব্যাপারে সোনালী ব্যাংক পিএলসি, আটোয়ারী শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ ফিরদৌস আল মাসুম বলেন, প্রযুক্তিগত কৌশল খাটিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। টাকা উদ্ধার করতে ব্যাংকের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস সামাদ চাকুরী জীবনের ১৫ লক্ষ টাকা হারানোর শোকে নাজেহাল হয়ে পড়েছেন। অনেকেই বলছেন, সোনালী ব্যাংকের মতো দেশের সুনামধন্য ব্যাংকে জনগণের টাকার নিরাপত্তা না থাকলে জনগণ কার উপর আস্থা রাখবে ?