
মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, ষ্টাফ রিপোর্টারঃ দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে আওয়ামী লীগ যেভাবে অবরুদ্ধ করেছে একইভাবে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের ঘোষণা না দিয়ে বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী গতকাল কোটা নিজেদের ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান।
তিনি বলেন, ‘এই সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। পুরো দেশটাকে তারা ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। দেশের সম্পদ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি নিয়েও দেশে বিভাজনের রাজনীতি সৃষ্টি করেছেন।’
আজ ১২ এপ্রিল ২০১৮ রোজ বৃহষ্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে ‘কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলন সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মতবিনিময় সভার আয়োজন করে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম।
মঈন খান বলেন, ‘কোটা সংস্কার করার জন্য ছাত্রদের ন্যায্য দাবিকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সরকারের মন্ত্রীরা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ বলে বিভাজনের সৃষ্টি করেছেন। বর্তমানে কোটার যে সিস্টেম যেটা গতকালের ঘোষণার আগে পর্যন্ত প্রচলিত ছিল সেটা হল এই জাতিকে মেধাশূন্য করার একটা নীল নকশা। মেধাবীদের এখানে কোনো স্থান ছিল না। সেই কারণেই সাধারণ ছাত্রসমাজ এটার প্রতিকার চেয়েছে। কিন্তু সরকার তার সমাধান না করে নিজের ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করেছে। যেভাবে অন্ধকার কারাগারে অবরুদ্ধ করেছে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে।’
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের আলোচনায় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জাম দুদু বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এমন একটা অবস্থানে তিনি শুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী নন অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানে তিনি এই ক্ষমতাকে অপব্যবহার করছেন। কোটা সংস্কার নিয়ে গতকাল জাতীয় সংসদে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সংবিধানের পরিপন্থী তিনি সংবিধানকে লংঘন করেছেন। রাগের বশবতি হয়ে প্রধানমন্ত্রী কোন কথা বলতে পারেন না। কিন্তু তিনি রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে এক ধরনের ধমক দিয়েছেন। আমি সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের কেউ চায়নি কোটা প্রথা বাতিল করা হোক। কিন্তু তারপরও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের ছাত্র ভাইদেরকে ধমক দিয়েছেন। তিনি ছাত্রদেরকে ছোট করেছেন।’
শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলনের নামে যে ঘটনা আপনি (প্রধানমন্ত্রী) টের পেয়েছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। এখন আপনার উচিত হচ্ছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়া।’
এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য একটি উদ্যোগ নিন এই বক্তব্যটা দিন। জাতীয় সংসদে যদি বলেন তাহলে জনগণ জাতি আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে এবং ছাত্রদের ওপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে যে মামলা করা হয়েছে আমি তার প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা হাজী মো. মাসুক মিয়ার সভাপতিত্বে এবং এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসন ঈশা প্রমুখ।