
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে ভূয়া ডেন্টাল ডাক্তার। হাতুড়ে ডাক্তারের ভূতুড়ে চিকিৎসায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে এক ডেন্টাল চেম্বারে। প্রশাসনের উদসীনতায় এমন ঘটনা ঘটছে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন। মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ১৯৮০ (১৯৮০ সনের ১৬ নং আইন) রহিতক্রমে কতিপয় সংশোধনীর ২২। (১) এই আইনের অধীন নিবন্ধন ব্যতীত কোন মেডিকেল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এলোপ্যাথিক
চিকিৎসা করতে অথবা নিজেকে মেডিকেল চিকিৎসক, ক্ষেত্রমত, ডেন্টাল চিকিৎসক বলিয়া পরিচয় প্রদান করিতে পারিবেন না। কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর বিধান লংঘন করিলে উক্ত লংঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।অথচ এই সকল আইনের তোয়াক্কা না করে তারা নির্দিধায় চেম্বার খুলে বসে আছেন।
অনুসন্ধানে জানাযায়, শহরের হাটখোলা রোড, মাজার রোড, রেজিস্ট্রি অফিস মোড়, খন্দকার পাড়া সহ শেরপুর ও শেরপুর শহরতলীতে প্রায় ৩০ টি ডেন্টাল চেম্বার রয়েছে। এর মধ্যে কিছু চেম্বারে সরকার অনুমোদিত ডাক্তার থাকলেও বেশীর ভাগ চেম্বারে নেই সরকার অনুমোদিত ডেন্টাল ডাক্তার। এসকল চেম্বারে রুগী দেখেন চিকিৎসা কাজে অনভিজ্ঞ লোকেরা। এমনকি কিশোর বালকদেরও চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে হাটখোলা রোডে চৈতী ডেন্টাল
কেয়ারে। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের নামের আগে বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) লাগিয়েছেন। যা আইন পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তারা সাইনবোর্ড, প্রেসক্রিপশন প্যাড, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদিতে
‘ডাক্তার” ও বিভিন্ন ভুয়া ডিগ্রী লাগিয়ে রুগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বহুদিন ধরে শেরপুর ডিজে হাইস্কুল খেলার মাঠ এলাকার ডেন্টাল সার্জন আব্দুর রাজ্জাকের প্যাড ও সিল ব্যবহার করে তার ভাই রুগী দেখেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ডেন্টাল চিকিৎসদের বিডিএ পদবীর পুর্ন নাম শুনতে নিপা ডেন্টাল কেয়ারের ডাঃ উৎসব কুমার রাহুলের কাছে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি কাজে ব্যস্ত আছি। বিডিএ এর পুর্ন নাম আমি আপনাকে পরে বলছি।শেরপুরের দন্ত চিকিৎসক ডাঃ তন্ময় স্যান্ন্যাল (এমবিবিএস,বিডিএস) জানান, সরকারি অনুমোদন না থাকলেও এ ধরনের চিকিৎসকরা দেশের আনাচে কানাচে চিকিৎসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। কাজ করতে করতে নিজেকে অভিজ্ঞ মনে করে নামের আগে ভুয়া ডিগ্রি লাগিয়ে রোগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সকল প্রকার রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে আসছে।এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া আমরা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনা। তারা নির্দেশ দিলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ লিয়াকত আলী সেখ জানান,স্বাস্থ্য সংক্রান্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর মনিটরিং ব্যবস্থা জোরালো করতে হবে। কেউ যদি নামের আগে ভুয়া ডিগ্রী লাগিয়ে রোগীদের দৃষ্টি
আকর্ষণ করে ভুল চিকিৎসা প্রদান করে তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।