
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন পদুয়া রাস্তার মাথায় বিভিন্ন শিল্প কারখানায় মাটি ভরাটকে কেন্দ্র করে মাটি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। রেহাই পাচ্ছে না ফসলি জমির টপসয়েল ও ফিলিং ষ্টেশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। শনিবার দুপুরে পদুয়া রাস্তার মাথার থ্রি-ষ্টার ফিলিং ষ্টেশনের ভাউন্ডারী দেয়াল ভেঙ্গে পাশ^বর্তী জমিতে মাটি ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ফিলিং ষ্টেশন কর্তৃপক্ষের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সুলতানা লিমার নির্দেশে স্থানীয় আলকরা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মাটি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, মহাসড়কের দুই পাশেই বীরদর্পে মাটি কেটে ট্রাক্টরযোগে পরিবহন করছে আনোয়ার হোসেন। এতে ধুলাবালির কারণে নাক-মুখ বন্ধ রেখে চলাফেরা করতে হয়। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। মাটি কাটার দায়ে একাধিকবার জরিমানা, কর্মচারীদের জেল ও ট্রাক্টর জব্দ করলেও বন্ধ হয়নি আনোয়ারের মাটি ব্যবসা।
থ্রি-ষ্টার ফিলিং ষ্টেশনের মালিক সহোদর ভ্রাতা হারুনুর রশিদ ও আব্দুল কাইয়ুম জানান, মাটি ব্যবসায়ী আনোয়ারের থাবায় তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। স্থানীয় প্রভাব প্রতিপত্তি দেখিয়ে সে ফিলিং ষ্টেশনের জায়গা, দোকান ঘর দখল করে ইট বিক্রি, বালি বিক্রি করছে। শনিবার সকালে ফিলিং ষ্টেশনের ভাউন্ডারী দেয়াল ভেঙ্গে পাশ^বর্তী নাবিবা স-মিলের মালিকানার জায়গা ভরাট করছে। খবর পেয়ে ফেণী থেকে এসে মাটি ভরাটে বাঁধা দিই এবং প্রশাসনকে অবহিত করি। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ঘটনাস্থলেই অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত ১২-১৫ বছরে মাটির ব্যবসায় জড়িত। ফিলিং ষ্টেশনের মালিকের সাথে লেনদেন রয়েছে। সেই অধিকারে ভাউন্ডারী দেয়াল ভেঙ্গে অন্যের জমি ভরাট করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে আবার নির্মাণ করে দিব। তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগেও প্রশাসন অভিযান চালিয়ে আমার লোকদের গ্রেফতার করে। এ সময় নগদ জরিমানা, ৭ জনকে জেলহাজতে পাঠালে তাদেরকে জামিনে বের করে আনা হয়েছে’।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেন জানান, ‘থ্রি-ষ্টার ফিলিং ষ্টেশনের ভাউন্ডারী দেয়াল ভেঙ্গে মাটি পরিবহনের বিষয়ে জেনেছি। তবে মাটি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন আমাকে কিংবা কাউকে জিজ্ঞেস না করেই কাজটি করেছে’।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানান, ‘সংশ্লিষ্ট মাটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে গত কিছুদিন আগেও অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে মাটি পরিবহনের ট্রাক্টর জব্দ ও ৭ জনকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। ভুক্তভোগী কেউ সরাসরি মামলা না করায় প্রকৃত মাটি ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয় না। এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের আরও ভুমিকা নিতে হবে। সর্বশেষ আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়েও মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান তুলে ধরেছি’।