এম.এ রাশেদ, বগুড়া প্রতিনিধিঃ- বগুড়ার ধুনট উপজেলার বেড়েরবাড়ী এলাকায় বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নবাব আলী। কয়েক দিন পুর্র্বে উপজেলা প্রশাসন তার ড্রেজার মেশিন জব্দ করে নিয়ে আসলেও বর্তমানে তিনি ভিন্ন চিত্রে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। তিনি রাতের আধারে বেড়েরবাড়ী বাঙ্গালী নদীর ব্রিজের নিচ থেকে বালু উত্তোলন করে। আর সেই বালু বিক্রি হয় দিনে। এতে প্রশাসনকে তিনি বৃদ্ধ আঙ্গুল দেখিয়ে অবৈধভাবে বালু ব্যবসা করে আসছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ২০১২ সালের জুলাইয়ে নির্মিত ধুনট উপজেলার সাথে গাবতলী উপজেলাকে সংযুক্ত করার ২৮৬ মিটার দীর্ঘ নিমগাছী বেড়েরবাড়ী সেতু। সেতুর ২ পার্শ্বে ৬ একর বালু মহল রয়েছে। সেগুলো আগে ইজারা দেওয়া হতো। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ বছরের জন্য এটি ইজারা দেওয়া হয়েছিলো। যার ইজারা মূল্যে ছিলো ৫ হাজার টাকা। এই বালু মহল নিয়ে হাইকোর্টে মামলা বিচার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিন্তু বালু খেকোদের থেকে নেই বালু উত্তোলন। প্রতিদিনই তারা বালু উত্তোলন করে আসছিলো। মাঝে মধ্যে বগুড়া জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করতো। অবার তারা পুরনায় অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করতো। এভাবেই চলছে বেড়েরবাড়ী এলাকায় বাঙ্গালী নদী থেকে বালু উত্তোলনের মহা উৎসব। আর এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর ২ তীরে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি নদীর গর্ভের বিলিন হয়ে যাচ্ছে। বালু খেকোদের কারনে কৃষকের ফসলি জমি হারিয়ে নিঃশ্ব হয়ে পড়ছে। এ যেন দেখার মতো কেউ নেই। বালু উত্তোলনকারী আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার কারনে ক্ষমতার দাপটে এখানে কেউ প্রতিবাদ ও করতে পারে না। সম্প্রতি এলাকাবাসি ফসলি জমি রক্ষার্থে ও অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে ২৯ শে সেপ্টেম্বর বগুড়া জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। জেলা প্রশাসক ধুনট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তাকে বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ এবং নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেন। গত ২০ অক্টোবর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ করার পর উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ড্রেজার মেশিনগুলো জব্দ করে নিয়ে আসে। সপ্তাহ না পার হতেই আওয়ামী লীগ নেতা নবাব আলী পুনঃরায় বালু উত্তোলন করে আসছে। এতে এবারের বালু উত্তোলনের কৌশলটা ভিন্ন। প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে রাতে উত্তোলন দিনে বিক্রি। বেড়েরবাড়ী ও নিমাগাছী গ্রামের প্রায় ২০ জন কৃষক জানান, নবাব আলীর এ কর্মকান্ড দেখে আমরা হতবাক। রাতে উত্তোলন করে আর দিনে বিক্রি করে। এতে প্রশাসনের চোখে পড়বে না দেখেইে তিনি এবার এ কৌশল বেছে নিয়েছে। আমাদের ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার একটাই কারন অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা। আর এর ফলে আমরা নিঃস্ব হতে চলেছি। কিছু দিন আগে আমাদের ফসলি জমি রক্ষার্থে এলাকাবাসি একজোট হয়ে জেলা প্রসাশকের কাছে দরখাস্ত দিয়েছিলাম। কিন্তু কোন প্রতিকার পেলাম না। এভাবে আর কত দিন। একসময় আমাদের পৈতিক ভিটাও নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে জোড়ালো অনুরোধ জানাচ্ছি অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বাঙ্গালী নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করুন। আমাদের ফসলি জমি রক্ষা করুন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমরা ইতিমধ্যেই ভ্রাম্যমান দিয়ে মেশিন জব্দ করেছি। শুনেছি আবারও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে ব্রিজ রক্ষার্থে আমরা স্থায়ীভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।