গত ৪ আগস্ট গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের বারোকোর্ট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সানি আহমদের মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (২ সেপ্টম্বর) দুপুরে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ২য় আদালতে নিহত সানি আহমদের পিতা উপজেলার শিলঘাট কুমারপাড়া এলাকার মৃত ওয়াহিত আলীর ছেলে মো. কয়ছর আহমদ (৫৫) এ মামলাটি দায়ের করেন ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৫১ জনের নামোল্লেখ সহ ৩০/৪০জনকে অজ্ঞাতনামা করে মোট ৯১ জনকে আসামী করা হয়।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও এজাহারনামীয় অন্য আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যন অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন, বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব (৫৫), পুলিশ ও আওয়মী লীগের দালাল আব্দুল আহাদ (৫৫), বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল (৫০), জেলা আওয়ামী লীগ সৈয়দ মিছবাহ (৬০), সৈয়দ জিল্লুর রহমান জিলু (৫৫), বদরুল ইসলাম জামাল (৬০), ঢাকাদক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হান্নান (৬৫), শিপন চন্দ্র শিবা (৪৫), গোলাপগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছাদেক আহমদ (৬০), আলাউর রহমান (৬০), দক্ষিণ রায়গড় দিঘিরপারের সাবেক মেম্বার সেলিম আহমদ (৪৫), সেলিম উদ্দিন (৫০), সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ (৩৩), উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রুমেল সিরাজ (৪০), উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান আমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাসিন মিন্টু (৫০), গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহিন আহমদ খান (৪৫), আব্দুল হানিফ খাঁন (৪২), আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর ফখর (৪৫), নাজিম উদ্দিন লস্কর উরফে দালাল লঙ্কর (৫০), মহানগর ছাত্রলীগ নেতা রুবেল আহমদ (৩৫), জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা আ.লীগ নেতা ফয়ছল আহমদ (৫৫), উপজেলা আ.লীগ নেতা ও লক্ষিপাশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জেবুল আহমদ (৬০), আওয়ামী লীগ নেতা জামিল আহমদ উরফে উদয় জামিল (৫৫), লাভু আহমদ (৩৭), জালাল মাস্টার (৫০), এনু মিয়া (৪০), ইমন আহমদ (৩২), আব্দুল আহাদ (৪৫), গোলাপগঞ্জ উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা অভিজিৎ রায় (৫০), গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুল আমিন (৫০), গোলাপগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র সরকার (৪৫), পুলিশ পরিদর্শক (অপারেসন্স) শংকর নন্দী মজুমদান (৪২), এসআই রাজিব কুমার রায় (৪০), এসআই এখলাছ (৪২), এসআই হাফিজুর রহমান (৪৪), এসআই আসিফ ইকবাল (৪৬), এসআই বিকাশ সরকার (৪৮), এএসআই সমীরন চন্দ্র দেব (৫০) ও সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা মো. শাহিন উরফে কসাই শাহিন (৩৫)।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট দুপুর ১টার দিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচী পালনকালে আইনশৃঙ্খলাকারী বাহিনীর সদস্য পুলিশ, বিজিবি এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের দুষ্কৃতিকারীরা দেশী-বিদেশী অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯, ১০,৩৫, ৩৬,৩৭ ও ১৩ নং আসামীদের হুকুমে অন্যান্য অজ্ঞাতনামাসহ আসামিরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ করতে থাকে। এতে সানি আহমদের শরীরে গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় স্বাক্ষীরা তাকে উদ্ধার করতে গেলে আসামিরা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে আসামিরা চলে যাওয়ার পর সানির রক্তাক্ত দেহ স্বাক্ষীসহ ছাত্রজনতা উদ্ধার করে স্থানীয় গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ৫ আগস্ট সকালে সানির লাশ দাফন করা হয়।