
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সূর্যমুখী ফুল চাষে কৃষির অপার সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে প্রণোদনা দিচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ধারনা সূর্যমুখী ফুল চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাবেন স্থানীয় কৃষকরা।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই খাতে কৃষির অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের পশ্চিমে গড়ে উঠেছে সূর্যমুখী ফুলের হলুদ প্রদর্শনী।
শুক্রবার সরেজমিনে জানা যায়, ৩০ শতক জমিতে ফুটে রয়েছে হাজারো সূর্যমুখী ফুল। প্যাসিফিক হাইসান ৩৩ জাতের বীজ বপন করে প্রথমে চারা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে চারা রোপণ করা হয় বালিয়াঘাট ব্লকের অমৃতপুর গ্রামের সামনে কৃষি পতিত জমিতে।
প্রদর্শনী কৃষক মো. নুরুল ইসলাম জানান, ৩০ শতক জমিতে প্রায় ১০ হাজার সূর্যমুখী গাছ রয়েছে। সারি করে বীজ বপন করা হয়েছে। এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব প্রায় ২০ সেন্টিমিটার। এক সারিতে একটি গাছ থেকে অপর গাছের দূরত্ব ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার। আকার ভেদে একটি ফুল থেকে ২৫০ গ্রাম থেকে ৩শ গ্রাম পর্যন্ত বীজ পাওয়া যাবে বলে ধারনা করছেন। চলতি মাসের শেষের দিকে এ বীজ সংগ্রহ করবেন বলে তিনি জানান।
এইদিকে সূর্যমুখী ফুল দেখতে প্রতিদিনেই উৎসুক জনতা ভিড় করছেন সূর্যমুখী প্রদর্শনীতে। সিলেট থেকে সূর্যমুখী ফুল দেখতে আসা ডা. মেহেদী হাসান জানান, সূর্যমুখী ফুলগুলো দেখতে খুব সুন্দর। সূর্যমুখী চাষ লাভজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বীজ থেকে তেল করা হলে ৩০ শতক জমি থেকে উৎপাদিত বীজে প্রায় ২ থেকে ২৫০শ লিটার তেল পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
নরসিংদী, কুষ্টিয়া ও বানিয়াগাও থেকে ফুল দেখতে আসা মনির হোসেন, দেব বিশ্বাস, সুজন মিয়া জানান, ফুলগুলোর সৌন্দর্য বলে শেষ করা যাবেনা। তারা বলেন, কৃষি অফিস এ ব্যাপারে সহায়তা দিয়ে স্থানীয় কৃষকদের আরো বেশী আগ্রহ বাড়ানো উচিত।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকতা হাসান উদ দৌলা জানান, এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে রাজস্ব খাতের অর্থায়নে সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত করার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে উদ্বুদ্ধ করার জন এই প্রথম ১০ জন চাষিকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রতি চাষিকে এক বিঘা জমির জন্য এক কেজি করে সূর্যমুখী ফুলের বীজ, সার, কীটনাশক দেয়া হয়েছে। গাছগুলো ভালো হয়েছে এবং ফুল সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ১০ জন চাষি সাফল্য পেলে আগামীতে কৃষি বিভাগের প্রণোদনার আওতা আরও বাড়ানো হবে।