বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাচ্চু জানান, খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার দাস ঠিকমত বিদ্যালয় আসে না ক্লাস নেই না। তার আচরণ ভালো না। তার কারনে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ২০১৭ সালে একবার বহিষ্কার হয়েছিল এই প্রধান শিক্ষক। গাছের ডালপালা কাটার ব্যাপারে আমি নিজে এটিও মহোদয়ের কাছে ফোন দিয়ে জেনেছি। তিনি মৌখিকভাবে একটি গাছের ডাল কাটার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতা নৈশ প্রহরী রাকিব দুজনে মিলে সাতটি গাছের প্রায় ২শ থেকে আড়াইশো মন গাছের ডাল বিক্রয় করে টাকা আত্মসাৎ করেছে তারা। তদন্ত করে এদের বিচার হওয়া উচিত।
খানপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার দাস বিদ্যালয়ে ঠিকমতো আসে না। আগে একবার দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ড হয়েছিল। এর আগেও বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের জানালা দরজা ও একটি সম্পূর্ণ টিনশেড ঘর বিক্রয় করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। ছাত্রলীগ নেতা নৈশ প্রহরী রাকিব তার কাজে সহায়তা করে। আবারো কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গাছ বিক্রয় করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। তার অনেক শক্তি তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না বলে স্থানীয়দের হুমকি দেয়।
বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী রাকিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি গাছ কাটার বিষয়ে বলেন, প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার দাস আমাকে যেভাবে বলেছে আমি সেভাবে গাছের ডালপালা কেটেছি। তিন দিন ধরে ৩ জন লেবার দিয়ে গাছের ডাল কাটা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় বন্ধের দিন সকালে স্যার নিজে এসে ডাল বিক্রয় করেছে। ৬ মন কাঠ ৬ হাজার টাকা বিক্রয় করেছে। ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রাকিব জানায় সে আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করে তবে ছাত্রলীগের কোন খাতা-কলমে তার নাম নেই।
বিষয়টি জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার দাসের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেন নাই।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম মাতুব্বরের নিকট ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ছাদের উপর একটি গাছের ডালপালা এসে ছাদের ক্ষতি করছিল, আর সে কারণে ওই গাছের ডালপালা কাঁটা জরুরি হয়ে পড়ে। ওই একটি গাছের ডাল কাটার জন্য আমি মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছি। সাতটি গাছের ডাল কাটতে আমি বলি নাই। ইতিমধ্যে স্থানীয়রা বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি তাদের কাঠ বিক্রয় করতে নিষেধ করেছিলাম। তারপরেও সে কাঠ বিক্রয় করেছে। রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, উত্তর খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে গাছের ডালপালা কাটার বিষয়ে শুনেছি। একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আগামী সোমবার ওই বিদ্যালয়ের তদন্ত যাবে তারা।
Please follow and like us: