ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম এবং রায়গ্রাম ইউনিয়নের ১টি গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের উপর বিরাজমান দারিদ্রের প্রকৃতি সম্পর্কে সংগৃহিত তথ্যের ফলাফল উপস্থাপনা ও ধারণা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের আয়োজনে সংস্থার বলিদাপাড়াস্থ প্রশিক্ষণ ও বিকাশ কেন্দ্রের হলরুমে জরিপের ফলাফল উপস্থাপনা করেন প্রোগ্রাম কো-অডিনেটর এ কে এম মাহতাব উদ্দিন, এরিয়া কো-অডিনেটর হাফিজুর রহমান ও প্রোগ্রাম অফিসার শাহিন হোসেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি, কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খন্দ: শরিফা আক্তার, উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা আবু বিল্লাল হোসেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল নোমান, পল্লী সমবায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক সেলিম আহমেদ, কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাবজাল হোসেন, দৈনিক গ্রামের কাগজ পত্রিকার কালীগঞ্জ প্রতিনিধি মিঠু শিকদার, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের ফিন্যান্স ডিরেক্টর সৈয়দা ইয়াসমিন পান্না প্রমুখ। জরিপ ফলাফ উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা,সুধীজন,সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
জরিপের তথ্য মতে, জরিপকৃত এলাকার হত দরিদ্র ৪৮২টি পরিবারের মধ্যে ১০২টি পরিবারের উপর জরিপ করা হয়। জরিপে উঠে আসে ইউনিয়নের হতদরিদ্র ৮ ভাগ পরিবার সারা বছর দিনে এক বেলা খায়। ২০ থেকে ২৫ ভাগ পরিবার বছরে ৩ মাস (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) এক বেলা খায়। বেশির ভাগ পরিবার ৫৫ভাগ ভাতের অভাব হলে বিকল্প খাবার হিসেবে আটা রুটি খেয়ে থাকেন। জরিপে আরো বলা হয় বেশির ভাগ পরিবার (৮০%) গবাদিপশু ও হাসমুরগী পালন করে থাকেন। দিন মজুরী এবং কৃসি কাজ এখনো প্রধান পেশা, ৭২% পরিবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছেন। জনপ্রতি প্রতিদিন খাবারের জন্য ব্যয়কৃত চালের পরিমান ৪০০ গ্রাম। বেশিভাগ পরিবারই চাল কিনে খায়। জরিপে আরা জানানো হয়, ইউনিয়নের ৩৪ % পরিবার শাক সবজি খায়। ৪০% পরিবার সপ্তাহে ১ বারও ফল খায় না। ৬৪% পরিবার ফল কিনে খায়। ৭০ ভাগ পরিবার প্রায় মাছ খায়, ৩০ ভাগ পরিবার ডিম খায়, ২০ ভাগ পরিবার দুখ খায়।
জরিপে আরো জানা যায়, হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে ৭৯% পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যগত সমস্য আছে এবং প্রতি পরিবারের ২.৮% সদস্যের সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। ৭০% নারী ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সাংসারিক কাজে নিয়োজিত। এলাকার ২০ % নারী কৃষিও একই সময় কাজ করেন। বেশির ভাগ নারী পরিবারের সাথে বসে খাবার খেলেও একই রকম খান না। জরিপের তথ্য মতে, বাল্য বিয়ে ও অল্প বয়সে মার্তৃত্বের প্রবণতা উচ্চ। গর্ভপাত ও নবজাতকের ১ বছরের কম শিশু মৃত্যুর হার সহনীয় পর্যায়ে নয়। বেশির ভাগ নারী ৭৬% তাদের প্র্যাতাহিক জীবনে অপুষ্টি জনিত শারীরিক অসুস্থতা বোধ করেন। প্রায় ৫০% পরিবার পুষ্টি বজায় রেখে রান্না করেন না। ৫৬ ভাগ নারীর ওজন স্বাভাবিক ও ১৮ ভাগ নারীর কম ওজন। ১১ ভাগ নারী খোলা জায়গায় রান্না করেন। ৮৬% রান্নার পরিবেশ স্বাস্থ্য সম্মত নয়।