গাজীপুরে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ কর্মসুচী পুলিশি অভিযানে পন্ড হয়ে গেছে। শুক্রবার জুমা’র নামাজের পর হেফাজতকর্মীরা বিক্ষোভ কর্মসুচী পালনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যেতে চাইলে পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ে। এসময় কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে সাত পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২০জন আহত হন। গাজীপুর মহানগরের চৌরাস্তা জামে মসজিদ এলাকায় ওইসব ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার বেলা ১১টা থেকেই গাজীপুর চৌরাস্তা ও বোর্ডবাজার জামে মসজিদের চারপাশে পুলিশ সশস্ত্র সতর্ক অবস্থানে থাকে। জুমা’র নামাজের শেষে দুপুর ২টার দিকে বিক্ষোভ কর্মসুচী পালন করতে হেফাজত কর্মীরা গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা জামে মসজিদ থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উঠতে চায়। পরে পুলিশি বাধায় কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) শরীফুর রহমান জানান, হেফাজতে ইসলামের পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ কর্মসুচী তাদেরকে মসজিদ চত্বরেই পালনের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তারা মহাসড়কে উঠার চেষ্টা নিয়ে পুলিশের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বাকবিতন্ডার পেছন থেকে হেফাজত কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা, শতাধিক রাউন্ড টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি করা হয়। এ ঘটনায় কেউ নিহত হননি। ইটপাকেলের আঘাতে পুলিশের সাত সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক তাদের নাম পরিচয় নোট করা হয়নি।
স্থানীয়রা জানায়, এ ঘটনায় ওই দুটি মসজিদের আশপাশের এলাকা প্রায় দুই ঘন্টার মতো জনশূণ্য হয়ে পড়ে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পরিবেশ স্বাভাবিক হয়। তবে বিক্ষোভকারীদের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ভিডিওসহ পোস্ট দেওয়া হয়। ওই সব পোস্টে শান্তিপূর্ণ মুসল্লীদের ওপর মসজিদের মাঠে অবস্থান নিয়ে পুলিশ গুলি করেছে অভিযোগ করা হয়েছে।
গাজীপুর জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা মাসুদুল করিম জানান, বোর্ড বাজার এলাকায় তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসুচী সম্পন্ন হয়েছে। শোনেছি চৌরাস্তা জামে মসজিদ থেকে কে বা কারা পুলিশের সাথে সংথর্ষে জড়িয়েছে। তাদের মধ্যে আমাদের কেউ ছিল কি না মসজিদের ইমাম সাহেব নিশ্চিত করে বলতে পারেননি এবং তিনি কাউকে চেনেন না। সেখানে ১৫ থেকে ২০ জনের মতো আহত হয়েছেন। তবে ওই মসজিদে হেফাজতের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসুচী ছিল না।