ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :- ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নে বাল্যবিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করায় কাজীকে তিন মাস ও বরকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার রাত ১১টার দিকে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ-আল-মামুন এ সাজা দেন।
কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলেন- ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের মাদরাসাপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে ও এই বিয়ে পড়াতে আসা কাজী আব্দুল আজিজ (৩৮) ও বর একই ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আল আমিন (২১)।
ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের আরাজি কৃষ্টপুর গ্রামের মাইনুদ্দিনের মেয়ের বয়স ১৬ বছর। তার সঙ্গে একই ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামের আল আমিনের বিবাহের দিন ঠিক হয় বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে। সন্ধ্যায় বর পক্ষ কনের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বাল্যবিবাহের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন -এমন সংবাদ পেয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপির চেয়ারম্যান মাহবুব আলম মুকুল ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় কনের বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
কনের বাড়িতে হাজির হয়ে দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। ভ্রাম্যমান আদালত উপস্থিত হওয়া মাত্র কনে ও তার বাবা- মা পালিয়ে যায়, তবে ঘটনাস্থল থেকে বিয়ের কাজী আব্দুল আজিজ ও বর আল আমিনকে আটক করে পুলিশ। এসময় কাজীর কাছ থেকে বিয়ের রেজিষ্ট্রি খাতা জব্দ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ভ্রাম্যমান আদালত বসালে কাজী আব্দুল আজিজ ও বর আল আমিন তাদের দোষ স্বীকার করেন। পরে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে কাজীকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও তার বিবাহ নিবন্ধন বাতিল করা হয় এবং বরকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
সদর থানার ওসি (তদন্ত) তানভিরুল ইসলাম বলেন, এই বাল্যবিবাহ বন্ধ হওয়ায় এবং কাজী ও বরের সাজা হওয়ায় সচেতনতা বাড়বে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এলাকার চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, স্থানীয় ব্যক্তি ও সুশীল সমাজের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। আশা করি এরপর অন্য অভিভাবকেরা সচেতন হবেন।
সাজাপ্রাপ্ত কাজী আব্দুল আজিজ ও বর আল আমিনকে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি (তদন্ত) তানভিরুল ইসলাম।