নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর ডিগ্রী কলেজের নারী প্রভাষকের রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে তাহেরপুর ফাঁড়ি পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে বাগমারা থানায় পাঠিয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সাইফুল ইসলাম প্রামানিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছেন বলে জানিয়েছেন বাগমারা থানার ওসি নাছিম আহমেদ। নিহত প্রভাষকের নাম সামছুুন নাহার। তিনি তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজের ইসলামী ইতিহাসের প্রভাষক ছিলেন। তার বাড়ি তাহেরপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড পাবনাপাড়া বাবুর বাগান এলাকায়। সামছুুন নাহার শ্রীপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আবেদ আলী মৃধার মেয়ে এবং তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি আবু বাক্কার মৃধা মুনছুর রহমানের ছোট বোন। আর নিহত নাহারের স্বামী সাইফুল ইসলাম তাহেরপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড ভাবনপুর মহল্লার নজির প্রমাানিকের ছেলে। তিনি তাহেরপুর পৌর বিএনপির সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহবায়ক ছিলেন। এদিকে সকালে সামছুুন নাহারের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা শত শত নারি-পুরুষ তার বাড়িতে ভিড় ভিড় জমায় তাকে এক নজর শেষ দেখার জন্য। তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লুৎফর রহমান জানান, কিভাবে নাহারের মৃত্যু হয়েছে প্রাথমিক তদন্তে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ছাড়াও তার ঘরে ধস্তাধস্তি ও বোমি করার আলামত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সাইফুল তার স্ত্রী নাহারকে মারধর করার কথা স্বীকার করেছেন। পরে সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয় বলে জানান তিনি। সামছুুন নাহারের বাবার পরিবারের লোকজন জানান, নাহারের লাশ তার শোয়ার ঘরের খাটের উপর পাওয়া গেছে। তবে ঘরের দরজা খোলা ছিল। আর বাড়ির মেইন গেটের দরজা বাহির থেকে তালা লাগানো ছিলো। সকালে তাদের পল্টি খামারে এক শ্রমিক খামারে কাজ করতে এসে দেখে বাড়ির মেইন গেটের দরজায় তালাবদ্ধ দেখে সে বাড়ির পাচির টপকিয়ে খামারের তালার চাবি নিয়ে তালা খুলে মুরগীদের খাবার দেওয়া শুরু করলে এসময় সাইফুল-নাহারের ছোট মেয়ে শশী তার খালার বাড়ি থেকে এসে দেখেন মেইন গেটের দরজা বাহির থেকে তালা লাগানো এসময় ঔই শ্রমিকে ডেকে দরজার তালা ভেঙ্গে ভেতর প্রবেশ করে মায়ের লাশ দেখতে পায়। এ সময় বাড়িতে আর কেউ ছিল না। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেও জন্য আটক সাইফুল পুলিশকে জানিয়েছে, বুধবার রাতে বড় কুটুম মুনছুর চলে যাওয়ার পর নাহারের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এ সময় সে ঝাড়– দিয়ে নাহারকে সামান্য মারপিট করে রাত দেড় টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাজশাহী শহরে চলে যান। নাহারের পরিবারের সদস্যরা জানান, সকালে সামছুুন নাহারের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাহেরপুর ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এবং লাশ উদ্ধার করে সেখানে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করেন। এবং পুলিশ সাইফুলকে রাজশাহী থেকে ডেকে নেন। পরে পুলিশের ফোন পেয়ে তিনি তাহেরপুরে আসেন। তবে বেশ কিছুদিন যাবৎ তাদের মধ্যে পারিবারিক কলেহ চলছি। এর জের ধরে মাঝে মধ্যে নাহারকে নির্যাতন করা হত। বুধবার দিবাগত রাতে নাহারের ভাই আবু বাক্কার মৃধা মুনছুর গিয়ে নাহার ও সাইফুলের মধ্যে মিমাংসা করে দেন। এর পর রাত সাড়ে ১২টার দিকে মুনছুর বাড়িতে চলে আসে। পরে আবারোও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এবং নাহারকে মারপিট করে সাইফুল বাড়ি থেকে চলে যায়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাগমারা থানার ওসি নাছিম আহমেদ জানান,ময়নত দন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাচ্ছেনা। মৃত্যুর কারন জানা গেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর আটক সাইফুলকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বিলেও জানান তিনি।