
বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা এবং পবিত্র কুরআনের নির্দেশিত পথে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নিরংকুশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বানের মধ্য দিয়ে আহমদীয়া মুসলিম জামাত যুক্তরাজ্যের ৫৮তম বার্ষিক জলসা সমাপ্ত হয়েছে।
২৬ জুলাই শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ৪:২৫মি. এ (বাংলাদেশ সময় রাত ৯:২৫মি.) বিশ্বের দুইশতাধিক দেশের জাতীয় পতাকার সাথে আহমদীয়া পতাকা উত্তোলন ও দোয়ার মাধ্যমে জলসার উদ্বোধন করেন নিখিলবিশ্ব আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের বর্তমান খলীফা হযরত মির্যা মাসরূর আহমদ (আই.)। ২৮ জুলাই স্থানীয় সময় বিকেল ৬:০০ টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায়) সমাপ্তি ভাষণ ও দোয়ার মাধ্যমে জলসার সমাপ্তি ঘটে।
যুক্তরাজ্যের এই বৃহত্তম মুসলিম সম্মেলনে সমবেত হয়েছিলেন প্রায় ৪৪ হাজার আহমদী মুসলিমগণ।এবারের জলসার বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় শত স্থানের আহমদীয়া সদস্যগণের ভার্চুয়াল অংশগ্রহণ।
জলসায় বিভিন্ন বক্তাগণ মহানবী (সা.)এর ঐশী গুণাবলি, দোয়ার কবুলিয়ত, মানবজাতির প্রতি প্রতিশ্রুত মসীহ্ (আ.)এর সহানুভূতি, সমসাময়িক যুগের নেতিবাচক প্রবণতাসমূহের প্রতিকার, আহমদীয়া খিলাফত মুসলিম উম্মাহ্র মাঝে ঐক্যের এক উৎস ইত্যাদি বিষয়ে প্রখ্যাত আলেম ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। জলসার দ্বিতীয় দিনের বক্তব্যে আহমদীয়া খলীফা বিগত এক বছরে বিশ্বব্যাপী আহমদীয়া মুসলিম জামাতের কার্যক্রম ও অর্জিত সাফল্যের এক ঝলক অতি সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন।গত এক বছরে বিভিন্ন ধর্ম গোষ্ঠি থেকে ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৫৬১জন মানুষ নতুন বয়আত করে আহমদীয়া মুসলিম জামাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
জলসার সমাপ্তি বক্তব্যে আহমদীয়া খলীফা মহানবী (সা.)-এর অতুলনীয় জীবনাদর্শ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিশ্বনবী ও শ্রেষ্ঠনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)এর অনুসরণ ও অনুকরণের মাঝেই সকল কল্যাণ নিহিত। ইসলাম এবং ধর্মবিদ্বেষীদের আপত্তির জবাবে ইসলামের অনুপম সুন্দর শিক্ষা এবং আহমদীয়া জামাতের প্রতিষ্ঠাতার দৃষ্টিতে মহানবী (সা.)এর অতুলনীয় শান ও মর্যাদার বিষয়টিও তিনি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
বক্তব্য শেষে তিনি সমগ্র বিশ্বের আহমদীদের শুকরিয়া আদায় করেন এজন্য যে, সময়ের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তারা মনোযোগসহ এ জলসায় উপভোগ করেছেন।
শেষে তিনি বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন।
জলসা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভিডিও ও লিখিত বার্তা প্রেরণ করেন। জলসায় প্রায় ৪৪ হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। দেশে ইন্টারনেট সমস্যা থাকা সত্তেও এমটিএ চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ১২৩টি স্থানীয় আহমদীয়া জামাতের কয়েক শত স্থানে আহমদীয়া সদস্যগণ জলসা উপভোগ করেন। উক্ত জলসায় বাংলাদেশের ন্যাশনাল আমীরের প্রতিনিধিসহ প্রায় ২০জন সদস্য এবং পশ্চিমা বিশ্বে বসবাসকারী প্রায় শতাধিক প্রবাসী বাঙালী আহমদী অংশগ্রহণ করেন।