গত অক্টোবর মাসে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের দুর্নীতির সংবাদ ছাপা হয়। এরপর ডিআইজি প্রিজন তদন্তে আসেন। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেনের নজরে এলে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারের অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করতে একটি টিম করেন। সেই টিমের প্রধান হিসেবে তিনি নেতৃত্ব দেন। তার সাথে ছিলেন উপ-সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন। এছাড়াও এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাদ জাহান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট লুৎফুন্নাহার, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ও কারা হাসপাতালের চিকিৎসক তাপস কুমার সরকার এবং জেল সুপার জাকের হোসেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, কারাগারে প্রবেশ করেই ক্যান্টিনে যান অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন। এ সময় ক্যান্টিনে একটি ডিমের দাম ৫০ টাকা নেয়া হয় বলে তিনি দেখতে পান। এছাড়া অন্যান্য খাদ্য পন্যের দাম বাইরের বাজার থেকে ৫ থেকে ৬ গুন বেশি রাখার বিষয়টি তার নজরে আসে। এছাড়া খাদ্যের মানে তিনি অনিয়ম পান বলে জানা গেছে। পাশাপাশি কারা হাসপাতালসহ ভিতরে নানা অনিয়মের প্রমান পেয়ে ক্ষুব্ধ হন। এ সময় জেল সুপারকে ২৪ ঘন্টার সময় দেন সব ঠিক করতে। না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্র্তে টিমের এক সদস্য বলেন,‘ খাদ্যসহ নানা বিষয়ে অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত দল। তারা হাতেনাতে বেশ কয়েকটি বিষয় ধরেছে। এ বিষয়ে কোন জবাব দিতে পারেনি কারাগার কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে ক্যান্টিনে খাদ্যের অস্বাভাবিক দামের বিষয়টি জানা গেছে।
এছাড়া ভিতরে অর্থের লেনদেনসহ নানা অনিয়ম পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ঠিকাদারদের সরবরাহ করা মাছসহ অন্যান্য খাদ্যে দ্রব্যে নিম্নমানের বলে জানা গেছে। হাসপাতালে বেড বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত দল। এদিকে আগেভাগে জানিয়ে আসলে কারা কর্র্তৃপক্ষ সজাগ হয়ে যেতে পারে সে জন্য বিষয়টি কাউকে জানানো হয়নি। সকালে হুট করেই কারাগারে চলে যান সৈয়দ বেলাল হোসেন। সে সময় কারাগারে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অনেক বিষয় গোপন করার চেষ্টা করা হয়। তবে তার আগেই অনিয়ম ধরা পড়ে সৈয়দ বেলাল হোসেনের নজরে। তিনি কারাগার কর্র্তৃপক্ষকে ভৎর্সনা করেন এবং সাবধান করে দেন। তদন্ত টিমের প্রধান সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন,‘ সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। বেশ কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়া হবে।