
ডুমুরিয়ায় খর্ণিয়া ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শেখ দেদারুল হোসেন দেদার বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় রানাই মহিলা দাখিল মাদ্রাসা মাঠে হাজার হাজার জনতার উপস্থিতিতে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তার মৃত্যুর খবরে সকাল থেকেই জানাজায় শরিক ও শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জনতার ঢল নামে। সকাল দশটা বাজতে বাজতে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের উপস্থিতিতে পুরো মাদ্রাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কমতি ছিল না নারী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতি। তারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকে প্রিয় চেয়ারম্যানকে হারিয়ে। জানাজা নামাজে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ আসাদুর রহমান, থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুদ রানা, খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম তুহিন, জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম আহবায়ক এ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, সাবেক সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, যুবদলের আহবায়ক ইবাদুল হক রুবায়েদ, বিএনপি নেতা খায়রুল ইসলাম মোল্লা, মোল্যা মোশাররফ হোসেন মফিজ, শেখ সরোয়ার হোসেন, সরদার আব্দুল মালেক, শেখ হাফিজুর রহমান, মোল্লা মাহাবুবুর রহমান, মশিউর রহমান লিটন, শেখ ফরহাদ হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দিন, বিএম জহুরুল হক, প্রভাষক মঞ্জুর রশিদ, জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম কুদ্দুস, মাওলানা মুখতার হুসাইন, হেফাজত নেতা মাওলানা মোস্তাক আহমেদ, মুফতি আব্দুল কাইয়ুম জমাদ্দার, শেখ শাহিনুর রহমানসহ প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, গ্রামপুলিশ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেতারা।
উল্লেখ্য ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের রানাই গ্রামে সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে তার জন্ম। ওই ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান শেখ আমজাদ হোসেনের জৈষ্ঠ্য পুত্র তিনি।পরিবারে ছয় ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ১৯৮৩ সালে খর্ণিয়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসএসসি,১৯৮৫ সালে খুলনা বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি ও পরে ঢাকার একটি পলিটেকনিক কলেজ থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স পাশ করেন। এরপর চিত্রজগতে একজন স্বনামধন্য চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি এগারোটি মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার প্রযোজক ছিলেন। গত ২০০২ সালে তিনি রাজধানীর বিলাসবহুল জীবন যাপন ছেড়ে চিত্রজগতকে পিছনে ফেলে মা মাটির টানে রানাই নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। এরপর থেকে মানব সেবা ও এলাকার উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেন তিনি। দলমতের ঊর্ধ্বে নির্বাচিত হন তিন তিন বার ইউপি চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক জীবনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি খর্ণিয়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ও জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি ফিলিস্তিনের উপর ইজরায়েলের বর্বরোচিত হামলা ও নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বিএনপির ডাকে খুলনা জেলায় বৃহস্পতিবার বিকেলে এক বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। এরপর মিছিল চলাকালে হঠাৎ তিনি স্ট্রোক করেন তাৎক্ষণিক দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
Please follow and like us: