ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ পুলিশের দায়ের করা সরকার উৎখাতের ৪টি মামলায় বিএনপি জামায়াতের ২২৫ জনের নাম উল্লেখ করে আড়াই শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্তের কর্মকর্তা আলাউদ্দীনের দায়েরকৃত ১৫ নং মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে বিএনপির পুরানো কমিটির সহ-সভাপতি সদর উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের মরহুম ইদ্রিস আলীকে। তিনি এই মামলায় ২১ নং আসামী। এছাড়া নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা বদিউর রহমানের দায়েরকৃত ১৭ নং মামলাও মৃত ইদ্রিস আলীকে ১৭ নং আসামী করা হয়েছে। একটি মামলায় ভুল করে মৃত ব্যক্তির নামে মামলা হওয়ার পর আরো একটি মামলায় আসামী করা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। ইদ্রিস আলীর ছেলে আহসান কবীর জানান, তার পিতা ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। তিনি বিএনপির পুরানো কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। দুই বছর পর তার পিতার নাম এহাজারে দেখে তিনি বিস্মত হন। আদালত সুত্রে জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রয়ারী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাতলামারী পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৬/২ ও ২৫ (খ) ধারায় ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮০/৯০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ৬ ফেব্রয়ারী ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই ফজলুর রহমান বাদী হয়ে একই ধারায় করা দায়েরকৃত মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৫০/৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গত ৭ ফেব্রয়ারী সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা আলাউদ্দীনের দায়েরকৃত মামলায় ৬২ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৪০/৫০ জন আসামী হয়েছেন। গত ৮ ফেব্রয়ারী সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা বদিউর রহমানের দায়েরকৃত মামলায় ৭৯ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৪০/৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে। সর্বশেষ দুটি মামলায় আসামী হয়েছেন বিএনপির প্রয়াত নেতা ইদ্রিস আলী। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক জানান, জেলা, থানা ও পৌর বিএনপির নতুন কমিটিতে ইদ্রিস আলী নামে তাদের কোন সহ-সভাপতি নেই। এই নামে তাদের কোন নেতা নেই বলেও তিনি দাবী করেন। তবে পুরানো কমিটিতে নলডাঙ্গ গ্রামের মরহুম ইদ্রস আলী ছিল বলে আব্দুল মালেক যোগ করেন। তিনি আরো বলেন, ৩ বছর আগের পুরানো কমিটির অনেকের পদ পদবী দিয়ে মামলা করা হলেও বর্তমান কমিটিতে তাদের পদ পদবী ভিন্ন। মৃত ব্যক্তির নামে মামলা রেকর্ড হওয়া নিয়ে বাজারগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা ও ১৫ নং মামলার বাদী আলাউদ্দীন জানান, গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যমতে ইদ্রিস আলীর নাম এসেছে। ইদ্রিস আলী মৃত হলে বিষয়টি ভুলের কারণে হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন। এদিকে নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা এবং ১৭ নং মামলার বাদী বদিউর রহমান জানান, তিনি মৃত হলে আদালতে লিখিত দিয়ে সংশোধন করা যাবে। বিষয়টি নিয়ে সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ বলেন, না ওটার তো কোন ঠিকানা ছিল না। পরে আমরা ঠিক করে দিয়েছি।