বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:- নওগাঁর বদলগাছীতে রাস্তার গাছ কেটে ফেলে রাখা হচ্ছে ইট ভাটার মাটি। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের বদলগাছী-আক্কেলপুর সড়কের সেনপাড়া নামক স্থানে রাস্তা ঘেঁষে ইটভাটা নির্মান করে রাস্তার পাশে বরেন্দ্র কর্র্তৃপক্ষের রোপন কৃত তালগাছ উপরে ফেলে ইটভাটার মাটি রাখায় চলাচলের জন্য ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে পথচারীরদের। এলাকাবাসীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, রাস্তার ধার ও বসত বাড়ী সংলগ্ন এই ইটভাটার কালো ছাই ও ধোঁয়ার কারনে প্রায়ই সময় আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। তারা আরো বলেন, আমরা শ্বাস কষ্টের কারনে ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার বলেন নিঃশ্বাসের সাথে কোন ধুলা বালি বা ধোঁয়ার কারণে এই সমস্যা গুলি বেশী হয়। কয়েক জন কৃষক বলেন, শুধু মানুষই নয় আগে আমার যে জমি থেকে ১৮-২০ মন সবজি পেতাম এখন জমির পার্শ্বে ইট ভাটা হওয়ার কারণে ফলন ১০-১২ মনে কমে এসেছে। এছাড়া আশেপাশের আম, কাঁঠাল সহ বিভিন্ন ফলের ও ক্ষতি হচ্ছে। এই ইটভাটায় ইট প্রস্তুত করার জন্য ৩ ফসলি জমির উর্বর টপ সয়েল কেটে তোলা হচ্ছে। এতে করে জমিগুলো তার ফসল ফলানোর ক্ষমতা স্থায়ী ভাবে হারিয়ে ফেলতে বসেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী বলেন, জমির টপ সয়েল ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। কেউ যদি জমির ৬ ইঞ্চি মাটি কেটে নেয় তাহলে জমির উর্বরতা কমে যাবে। যার কারনে জমির ফলন ও কম হবে। ফলে জমির স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে ৫-৭ বছর সময় লাগে। তাছাড়া আম, কাঁঠাল সহ বিভিন্ন ফলদ গাছের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে যার ফলে ফলন কম হচ্ছে। নীতিমালা তোয়াক্কা না করে উপজেলার বদলগাছী-আক্কেলপুর রাস্তা ঘেঁসে খাঁন ব্রিক্স ইটভাটায় ব্যাপক হারে পোড়ানো হচ্ছে জ্বালানী হিসাবে কয়লার পরিবর্তে কাঠ ও সয়াবিনের (উচ্ছিষ্ট) গাদ। যার গন্ধে এলাকার মানুষের বসত বাড়ীতে অবস্থান করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে সেনপাড়া গ্রামের জগন্নাথ, অনিকা, হরিশ চন্দ্র, গীতিকা, ববিতা, আরতী সহ অনেকে জানায়, এই ইটভাটার কালো ধুয়া ও সয়াবিনের গাদের (উচ্ছিষ্ট) গন্ধে বাড়িতে থাকা কষ্টকর হয়ে গেছে। এমনকি ঘরের জানালা দরজা খুলতে পারি না। খাঁন ব্রিক্স এর ভাটার মাটি পাকা রাস্তার পার্শ্বে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের রোপনকৃত তাল গাছ উপরে ফেলে মাটি ভরাট করছে। যার ফলে যানবাহন সহ জন সাধারনের চলাচলের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। উক্ত ভাটার প্রোপাইটর মোঃ ছামছুল আলম খাঁনকে না পেয়ে তার বড় ভাই মোঃ আজিজুল হক এর সংগে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন সয়াবিনের উচ্ছিষ্ট আমরা একা পুড়ছি না। অনেকেই পুড়ছেন। তালগাছ উপড়ে ফেলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এখন অসুস্থ পরে আপনাদের সংগে কথা বলব। বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ হারুনুর রশিদ বলেন, ঐ রাস্তার পার্শ্বে তাল গাছ আমাদের রোপনকৃত। বিষয়টি আমি জেনেছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বদলগাছী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ড. মোঃ রুহুল আমিন বলেন, শুধু ইটভাটার কালো ধোঁয়া-বালুর কারনে যে কোন শ্বাস কষ্ট, হাঁপানি, এজমা সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুম আলী বেগ বলেন, আমি প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছি নিয়ম বর্হিভূত কোন ইট ভাটা বদলগাছীতে না রাখার জন্য। জমির টপ সয়েল যেন ভাটার মালিকরা নষ্ট না করে সেই বিষয়ে আমার প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।