পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। আটোয়ারী উপজেলার আয়তন ২১০.০২ বর্গ কিলোমিটার। উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষ জনসংখ্যার চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চিকিৎসা সেবায় ব্যাপক সুনাম অর্জন করলেও এখন তা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা. হুমায়ুন কবীর। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. মোঃ হুমায়ুন কবীর জানান, ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা সহ ২৮ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কাগজপত্রে কর্মরত রয়েছেন ৪ জন। কর্মরত ৪জন চিকিৎসকের মধ্যে মেডিকেল অফিসার(ইউনানি) ডা.জাকিয়া সুলতানা রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেষনে আছেন এবং মেডিকেল অফিসার ডা.অনন্যা পাল বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। একমাত্র গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. নাহিদা সিদ্দিকা নিয়মিত অফিস করেন। বাহির থেকে অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার এনে প্রতি সপ্তহের বুধবার সিজারিয়ান কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে। তিনি অফিস সময়ে রোগী দেখেন।
হাসপাতালে আর কোন চিকিৎসক না থাকার কারণে নিজেই উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক, আবাসিক মেডিকেল অফিসার এবং মেডিকেল অফিসারের সহ জরুরী বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক কাজের জন্য সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয়। এরপর ৫০ শয্যা হাসপাতালের বহিঃবিভাগ, আন্তঃবিভাগ ও জরুরী বিভাগ চালানো মোটেও সম্ভব নয় । ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন, ৫০ শয্যা হাসপাতালে কোন কোন দিন ৮০ থেকে ৯০ জন রোগী থাকেন। এদের সামলাতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। এ হাসপাতালে চিকিৎসক ছাড়াও ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারীর অনেক পদ শুন্য রয়েছে। হাসপাতালের সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, চিকিৎসক সহ অন্যান্য শুন্য পদ পুরণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারংবার পত্র দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন, ডা. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন,আটোয়ারী হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি আমার মাথায় আছে। আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। খুব শীঘ্রই এর কিছুটা সমাধান হবে-ইনশাআল্লাহ। উপজেলার আধুনিক সুযোগ- সুবিধা সম্বলিত মডেল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হওয়ায় হতবাক সাধারণ মানুষ। ডা. হুমায়ুন কবীরের দাবী হাসপাতালে চিকিৎসক সহ জনবল সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করায় ইচ্ছা থাকা সত্বেও পরিপূর্ণ সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দ্রুত জনবল সংকটসহ আনুষঙ্গিক সমস্যার সমাধান হলে এখানেই আধুনিকমানের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।