রাজশাহীর তানোরে উদ্বোধনের দুমাস পার হতে না হতেই ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আরসিসি ব্রীজ ও সড়ক চরম ঝুঁকিতে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কলমা ইউনিয়ন(ইউপির) চন্দন কোঠা রাস্তার ব্রীজ ও রাস্তায় এমন ঘটনা ঘটে রয়েছে। অবশ্য নির্মানের শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও ব্রীজের দু’মুখে কয়েকহাত করে জায়গায় ইট বিছিয়ে রাখা হয়েছে। সেই ইটগুলো এলোমেলো হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে করে ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। ফলে দ্রুত ব্রীজটির দিকে নজর দেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।
জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত “গ্রামীণ রাস্তার ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু/কার্লভাট প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চন্দনকোঠা হরিপুর রাস্তার মমিনের জমির পার্শ্বে ৫০”-০” মিটার আরসিসি ব্রীজের কাজের উদ্বোধন করেন এমপি ফারুক চৌধুরী। তারিখ ৫ জুন ২০২৩ ইং। ইউনিয়ন কলমা। কাজের ব্যয় ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ৩৩৮ টাকা। চুক্তি মূল্য ৭১ লাখ ১৪ হাজার ৮৭১ টাকা ১০ পয়সা। নির্মান কাজটি করেন মেসার্স এম এস মোল্লা ট্রেডার্স। প্রোপাইটার সেকান্দার মোল্লা, তানোর রাজশাহী। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কামারগাঁ ইউপির হরিপুর হতে কলমা ইউপির চন্দনকোঠা হয়ে দরগাডাংগা যাওয়া যায় রাস্তাটি দিয়ে।
কলমা ও কামারগাঁ ইউপির যোগাযোগের সেতু বন্ধন রাস্তাটি। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময় খাল থেকে মাটি কেটে রাস্তাটি নির্মান করা হয়। পরে বর্তমান সরকারের সময় রাস্তাটি কার্পেটিং করা হয়েছিল। রাস্তাটিতে একটি বড় ব্রীজ ও একটি ছোট ব্রীজ নির্মান করা ছিল। কিন্তু ছোট ব্রীজ টি অকারনে ভেঙ্গে নতুন ভাবে করা হয়। নির্মান করার সময় থেকেই নিম্নমানের রোড সিমেন্টসহ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। নির্মাণ করার সময় পুরাতন ব্রীজটি ভাঙ্গতে দীর্ঘ সময় লাগে। নির্মান কাজের উদ্বোধন করেছিলেন এমপি ফারুক চৌধুরী।
তবে কাজ শেষ হওয়ার পর এমপি উদ্বোধন না করলেও ফলকে তার নাম ব্যবহার করে চালিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ব্রীজের দু’মুখে কয়েক হাত করে হেয়ারিংবন্ড করার কথা থাকলেও যত্রতত্র ভাবে ইট বিছিয়ে রাখা হয়েছে। যার কারনে ইটগুলো এলোমেলো ও ফারাক হয়ে পড়ে রয়েছে। স্থানীয় রা জানান, পুরাতন ব্রীজটাই ঝুঁকি মুক্ত ছিল। কিন্তু নতুন ব্রীজটি নির্মাণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রায় সপ্তাহ ধরে ভারি মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। ব্রীজের উত্তর দিকে রয়েছে খাল। খালে তেমন ¯্রােত নেই। তারপরও ব্রীজের দু’মুখ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। ইটগুলো এমন ভাবে আছে ভারি ভ্যান অটো নিয়ে যাওয়া যাচ্ছেনা।
প্রতি শুক্রবার চৌবাড়িয়া হাটে গরু নিয়ে যায় রাস্তাটি দিয়ে। কিন্তু অবস্থা এতই খারাপ গরু বহন করা গাড়ি নিয়ে গেলেই উল্টে যাবে। ঠিকাদার সেকান্দর মোল্লা জানান, ব্রীজের কাজের শুরু ডাইবেশন ও পুরাতন ব্রীজ ভাঙ্গার জন্য তেমন বরাদ্দ ছিলনা। এদুটো কাজ করতেই সময় লেগেছে। ব্রীজের দু’পারে হেয়ারিংবন্ড করা আছে। এগুলো বসলে কার্পেটিং করতে হবে।
হেয়ারিংবন্ডের ইটগুলো এলোমেলো ও ফাঁকফোকর হয়ে পড়ে রয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান কাজ করতে পেরেছি এটাই অনেক বড় ব্যাপার বলে এড়িয়ে যান তিনি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কাইসার আহম্মেদ বলেন, আমি নতুন এসেছে, ব্রীজ দেখে যদি সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে ঠিকাদারকে দিয়ে মেরামত করানো হবে।