ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ঃ
লাভজনক ফসল হওয়ায় ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাষীদের মধ্যে। চলতি মৌসুমে ৩৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছে প্রায় দুই হাজার ৫০ জন চাষী। মাঠের পর মাঠ জমিতে সবুজ পাতার আড়ালে হাসছে হলুদ রঙ্গের ভুট্টা। মাথায় লাল ফুল,গায়ে হলুদ বর্ণের এসব ভুট্টা দোল খাচ্ছে বাতাসে। অনেক চাষীর জমিতে রোপন করা ভুট্টা গাছে মুচা বাঁধতে শুরু করেছে । বাতাসে ভুট্টার দোল খাওয়ার সাথে চাষীও লাভের স্বপ্ন দেখছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানাগেছে,খরচ কম ও উৎপাদন বেশি হওয়ায় চাষীদের মধ্যে ভুট্টা চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।এখন আর তাদের বেশি করে উদ্ধুদ্ধ করতে হচ্ছে না। অনেক চাষী নিজে আগ্রহী হয়ে ভুট্টা চাষ করছেন। কালীগঞ্জ কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার সাহা জানান, ৩/৪ বছর আগে এ উপজেলায় ভুট্টা চাষঅর সংখ্যা ছিল অনেক কম। সে সময় হাতে গুনা ৭শ থেকে ৮শ জন চাশী ভুট্টা চাশ করতো। কিন্তু সেই অবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। গত মৌসুমে ভুট্টা চাষ হয়েছিল ১১০ হেক্টর জমিতে । আর চলতি মৌসুমে সাড়ে ৩শ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে ২৪০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ বেশি হয়েছে।
্ওই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর,আলাইপু,দাদপুর,হাসানহাটি,সানবান্ধা,মস্তবাপুর ও ফরাসপুর গ্রামের জমিতে বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছে। ভুট্টা চাষে প্রায় অর্ধেক আবার বাজার বুঝে তার বেশি লাভ থাকে। কুলুখালি গ্রামের ভুট্টা চাষী শুকুর আলী জানান, তিনি প্রায় ৫০ শতক জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। ৫০ শতক জমিতে ভুট্টার আবাদে সার,বীজ,কীটনাশক,সেচ ও পারিচর্যা বাবদ তার ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আরও জানান বাজারে ৬শ থেকে ৭শ টাকা মন দরে ভুট্টা বিক্রি হয়ে থাকে।
অপরদিকে ফরাসপুর গ্রামের ভুট্টা চাষী আক্তার,জহর,সামাদ,নুরুল ইসলামসহ একাধিক চাষী জানান, অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষে ঝুকি কম। কারণ ভুট্টার রোগ-বালাই খুব কম হয়। লাগানো থেকে শুরু করে ৫ মাসের মধ্যে ভুট্টার ফলন পাওয়া যায়। খরচ-খরচা বাদে প্রায় অর্ধেক লাভ থাকে । বাজার ভালো হলে বেশি হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তঅ কৃষিবিদ জাহিদুল করিম বলেন,চুয়াডাঙ্গা,মেহেরপুর ও মহেশপুর এলাকায় ভুট্টার আবাদ বেশি হয়।
ইদানিং কালীগঞ্জ উপজেলায়ও ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি মৌসুমে ২৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু আবাদ হয়েছে সাড়ে ৩শ হেক্টর জমিতে । অর্থাৎ চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রর চেয়া ৭০ হেক্টর জমিতে বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন,ভুট্টার তেমন একটা রোগ বালাই হয় না। তাই ভুট্টা চাষে ঝুকি কম আবার লাভও ভাল হয়। যার কারনে আগের থেকে ভুট্টা চাষে চাষীদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। চলতি মৌসুমে প্রায় ২ হাজার ৫০ জন চাষী ভুট্টার আবাদ করেছেন।
তিনি আরও বলেন,ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়াতে ৫০০ জন চাষীকে প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। এসব চাষীদের বিনামূল্যে ২ কেজি বীজ,২০ কেজি ডিএপি সার ও ৩০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ভুট্টার উপর ৩০ টি প্রদর্শণী প্লট করা হয়েছে।